গ্রাম বাংলা ডেস্ক: সংসদে উত্থাপিত ‘সংবিধান (যোড়শ সংশোধন) বিল-২০১৪’ সংসদীয় কমিটির সুপারিশ আকারে কাল বুধবার পাস হচ্ছে। এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিতের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরে আসছে। সংবিধানের ৯৬অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এই বিধান করা হচ্ছে।
মূলত ১৯৭২ সালের সংবিধানে ৯৬ অনুচ্ছেদে বিচারপতিদের অপসারণের ব্যাপারে যেসব দফা ছিল এই সংশোধনীর মাধ্যমে সেই সেই দফাগুলো পুন:স্থাপন করা হচ্ছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। পরে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসে বিলটি চূড়ান্ত করে রোববার সংসদে রিপোর্ট দেয়।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংবিধান সংশোধন বিল পাসের যাবতীয় প্রস্তুতি এরই মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। এ ধরনের বিল কণ্ঠভোটের সঙ্গে সঙ্গে বিভক্তি ভোটের মাধ্যমে পাস করানোর বিধান রয়েছে। এল্েয ভোটের ব্যালটও তৈরি করা হয়েছে। সংসদ সদস্যরা কণ্ঠভোটে বিলটি পক্ষে বিপক্ষে ভোট দেয়ার পর লবিতে রাখা ব্যালটে স্বারের মাধ্যমেও ভোট দেবেন।
সংসদ সচিবালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ,ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, হাজি মো. সেলিম, তাহজীব আলম সিদ্দিকীসহ কয়েকজন সদস্য বিলের ওপর কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।
বিলটি পাসের তিন মাসের মধ্যে সহায়ক আইন পাস হবে বলে ইতিমধ্যেই আইন মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
এদিকে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের সময় সংসদে উপস্থিত থাকার জন্য সরকারি দল আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের সদস্যদের বুধবার সংসদে থাকার জন্য দলীয়ভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের দফা ২,৩ ও ৪ পুন:স্থাপনের প্রস্তাব করে বিলটি আনা হয়।
বিলে উল্লেখিত উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের প্রস্তাবনা, ৭ ও ১১ অনুচ্ছেদ এর বিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগন এবং তাহাদের পক্ষে এ ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে। ইহার প্রতিফলনে ১৯৭২ সনে প্রণীত সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিমকোর্টের কোন বিচারককে তাঁহার বিরুদ্ধে প্রমানিত অসদাচারণ বা অসামর্থ্যরে কারণে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার। অন্যূন দুই তৃৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে অপসারণের বিধান ছিল।
কিন্ত পরবর্তীতে এই পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্যরে কারণে রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা কোন বিচারককে তাহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে বলিয়া বিধান করা হয়। উক্ত বিধানে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল যে, কোন বিচারককে তাহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা গ্রহনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগদান না করা পর্যন্ত তাহাকে অপসারিত করা যাবে না।