বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করবই—প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়

21263_bbb

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। সন্ত্রাসীদের সমূলে নির্মূল করে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করবই।’ তিনি আরও বলেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আজ শনিবার রাত পৌনে আটটায় রেডিও ও টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোকও ঘোষণা করেন তিনি।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেন, দেশি-বিদেশি একটি চক্র দেশের অগ্রযাত্রা বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। অস্ত্রের মুখে নিরীহ সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এরা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করাতে চায়। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে এরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। কোমলমতি যুবক-কিশোরদের ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। যেকোনো মূল্যে সরকার এই ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করবে। তিনি ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে একযোগে কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, গত রাতে কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজধানীর গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। সেখানে অবস্থানরত নিরস্ত্র, বেসামরিক নাগরিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং হত্যাকাণ্ড শুরু করে। পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যখন এশা ও তারাবির নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন এই হামলা ধর্ম ও মানবিকতাকে অবমাননা করেছে। এই বর্বর ও কাপুরুষোচিত আক্রমণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে নজিরবিহীন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেয়। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছান এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর কমান্ডোরা অভিযানে অংশগ্রহণ করে আজ সকালে জিম্মিদের মুক্ত করে আনেন। ছয়জন হামলাকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তিনজন বিদেশিসহ ১৩ জন জিম্মিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশ্বসম্প্রদায়ের নেতারা, যাঁরা বাংলাদেশের সঙ্গে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করেছেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। তিনি সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের সদস্যসহ নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি, কমিউনিটি পুলিশ এবং সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে সন্ত্রাস মোকাবিলায় এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, যেসব কোমলমতি যুবক-কিশোর বিপথে পরিচালিত হচ্ছে, যাঁরা তাদের মদদ দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন—মানুষকে হত্যা করে কী অর্জন করতে চান? ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দিন। তারা যাতে বিপথে না যায়, সেদিকে নজর রাখুন। বিপথগামীদের প্রতি আহ্বান, আপনারা সঠিক পথে ফিরে আসুন। ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখুন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *