জেলা পরিক্রমা-২৭: জিসিসির মেয়র পদের মন্ত্রীত্ব নিয়ে চাপা উত্তেজনা

Slider জাতীয় টপ নিউজ

file (1)

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর থেকে ফিরে; সারা দেশের সিটিকরপোরেশন গুলির মধ্যে ৪টি সিটিকরপোরেশনে জাতীয় পতাকা দিয়ে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য করার পদ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিন, নারায়ানগঞ্জ ও রংপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র পদকে জাতীয় পাতাকা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মন্ত্রী পরিষদের সদস্যের সমমান দেয়ার গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।

এতে ঢাকার দুই সিটিকরপোরেশনের মেয়র পেয়েছেন পূর্ন মন্ত্রীর পদ মর্যাদা। নারায়ানগঞ্জের মেয়র পদ পেয়েছেন উপমন্ত্রী ও রংপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র পদ পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা।

স্থানীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্রগ্রাম সিটি মেয়রকে মন্ত্রী ও গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র পদকে কমপক্ষ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদা দেয়া হতে পারে।

আইনের সমতা যদি হয় তবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদা পাবেন। বর্তমানে গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র সময়িক বরখাস্ত হয়ে কারাগারে থাকায় জাতীয় পতাকা প্রাপ্তী নিয়ে জল্পনা কল্পনা রয়েছে।  স্থানীয় সরকারের আইন অনুসারে মেয়র পদকে জাতীয় পতাকা দেয়া হয় ব্যাক্তিকে নয়। তবে রাজনৈতিক কারণে যেহেতু বিএনপি সমর্থিত মেয়ররা সকলেই পদচ্যুত এবং মেয়র পদে আসীন রয়েছেন আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর সেহেতু এখন আর মেয়র পদকে জাতীয় পতাকা দিতে রাজনৈতিক কোন কৃপনতা নেই।

গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের বর্তমান মেয়র পদে আছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ। আইন অনুসারে মেয়র পদকে জাতীয় পতাকা দিলে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদা পাবেন। কিন্তু কিরণ প্রতিমন্ত্রী হলে লাভ ক্ষতির হিসেব নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ।

আওয়ামীলীগের দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপির মেয়রকে হটিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের হাতে মেয়র পদটি আনা হয়েছে কাউন্সিলর কিরণের মাধ্যমে। তখন কেউ আচঁ করতে পারেন নি যে কিরণ প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেতে পারেন। আবেগ কাজ করায় তখন কেউ এ বিষয়টি তেমন ভাবে গুরুত্ব দেয়নি। এখন আস্তে আস্তে সিটি মেয়র পদগুলিকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যের মর্যাদা দেয়ায় অনেক বড় নেতারা নড়েচড়ে বসছেন।  কিরণ প্রতিমন্ত্রী হলে গাজীপুরের যে সকল আওয়ামীলীগ নেতা ও এমপিদের দেখলে কিরণ দাঁড়িয়ে বা কখনো চেয়ার ছেড়ে সম্মান দিতেন তখন তিনি আর এ কাজটি হয়ত করবেন না।

সূত্র বলছে, আওয়ামীলীগের যে সিনিয়র নেতার গোপন নির্দেশে গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র পদটি পরিচালিত হচ্ছে তিনি এমপি বা মন্ত্রী পরিষদের কেউ নন। কোন দিন ছিলেনও না। সুতরাং কিরণ প্রতিমন্ত্রী হলে ওই নেতার নির্দেশ কতটুকু মানবেন বা তাকে কতটুকু সম্মান করবেন তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে।

গাজীপুরের সচতেন মহল মনে করেন, জিসিসির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান  কিরণ প্রতিমন্ত্রী হলে গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগে নতুন ভাবে কোন্দল দেখা দিতে পারে। কারণ তখন গাজীপুর জেলায় মন্ত্রী পরিষদের তিনজন সদস্য হয়ে যাবেন। তাদের মধ্যে কিরণ হবেন অনাকাংখিত ভাবে। ফলে জিসিসি দখলে রাখার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ কিরণকে যতটুকু সহযোগিতা করছেন প্রতিমন্ত্রী হলে ততটুকু করবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

একটি গোপন সূত্র জানায়, জিসিসির মেয়র পদকে জাতীয় পতাকা দিলে কারাবন্দি সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান আদালতের স্বরণাপন্ন হতে পারেন। তবে যেহেতু মেয়র হয়েও পদ থেকে ছিটকে পড়ে কারাগারে আছেন অধ্যাপক মান্নান তাই মান্নানের বাঁধা দেয়াকে কিরণ প্রতিমন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু তার প্রতিমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে তার দল কতটুকু সমর্থন করবে তাই ভেবে দেখার বিষয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *