সম্পাদকীয়: টার্গেট কিলিং ইন ফ্যামিলি, অর নট?

Slider জাতীয় সম্পাদকীয়

9a692cd24728bffb7c3589cdae12b459-JHENIDAH-01

 

এক খুনকে উদ্দেশ্য করে টার্গেট কিলিং বন্ধের অজুহাতে ধরপাকর করা হয়েছে ১৫ হাজার মানুষ। এখন দেখা যাচ্ছে ওই খুনটি পারিবারিক কারণে হয়ে থাকতে পারে। মানে টার্গেট কিলিং ইন ফ্যামিলি। এই অবস্থায় কিছু সময় বন্ধ থাকার পর আবারো টার্গেট কিলিং শুরু হয়েছে। টার্গেট কিলিং এ যারা খুন হচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই কোন না কোন পরিবারের সদস্য। তবে  তারা যাই হউক পুলিশ সুপার পরিবারের সদস্য নন। ফলে টার্গেট কিলিং বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছিল তখন যখন এসপির স্ত্রী খুন হলেন। মানে হল, এসপির পরিবার ই পরিবার। অন্যদের পরিবার পরিবার নয়। এ রকম ধারণা থাকা ঠিক নয়। প্রত্যেকটি নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবেন এটাই আইন ও সংবিধান। তাই অধিকারের প্রশ্নে প্রত্যেকটি খুনের ন্যায় বিচারের জন্য সরকারের সমান দৃষ্টি থাকা উচিত। কারো জন্য কম কারো জন্য বেশী হওয়া উচিত নয়। আর এই সকল খুনকে পুঁজি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টাও অনুচিত।

আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে  ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় মঠের এক সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।  নিহত সেবায়েতের নাম শ্যামানন্দ দাস ওরফে বাবাজি (৫০)। তিনি উপজেলার উত্তর কাষ্ট সাগরা গ্রামের শ্রীশ্রী রাধামদন গোপাল বিগ্রহে (মঠ) কর্মরত ছিলেন। শ্যামানন্দের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার মুসুরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নাম কিরণ চন্দ্র।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শ্যামানন্দকে গুরুতরভাবে জখম করে। ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করে এক নারী প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো আজও পূজার জন্য ফুল তুলতে মঠ থেকে বের হয়েছিলেন শ্যামানন্দ। এ সময় শহরের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে আসা তিন ব্যক্তি শ্যামানন্দকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। মোটরসাইকেলের আরোহীদের মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। মাথায় ছিল ক্যাপ। মাঝের জনের হাতে ছিল একটি রামদা।

মঠ পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মণি কুমার রায় বলেন, গত তিন বছর ধরে সেবায়েতের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন শ্যামানন্দ। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। পূজা-অর্চনায় সব সময় ব্যস্ত থাকতেন। তাঁর বাইরে যাওয়া-আসা খুব কম ছিল।

গত ১০ জুন পাবনার সদর উপজেলার হিমাইতপুর গ্রামের শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের (হিমাইতপুর ধাম) সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে (৬২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার তিন দিন আগে ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষারভাগাড় এলাকায় হিন্দু পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীকে (৭০) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

কিলিং চলাকালে  চট্রগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী খুনের হয়। প্রথমে কিলং গ্রুপ ও পরে বিএনপি-জামায়াতকে সন্দেহ করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যা যে টুকু উদঘাটন হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে এসপির স্ত্রী হত্যা পারিবারিক কোন কারণ থাকতে পারে। তাহেল প্রশ্ন এসে যায়, টার্গেট কিলিং বন্ধে ষাঁড়াশি অভিযান ছিল না এসপির স্ত্রী খুনকে পুঁজি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা হয়েছে। আসলে সরকার টার্গেট কিলিংকে রাজণৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কি না তা খতিয়ে দেখার বিষয়। টার্গেট কিলিং যে কারণেই হউক এটা বন্ধ হওয়া উচিত। না হলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *