মিতু হত্যায় গ্রেফতার আরও ২

Slider জাতীয়

 

20378_lead

 

 

 

 

 

 

পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘ব্যবহৃত অস্ত্রসহ’ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 মঙ্গলবার ভোররাতে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকা থেকে এহতেশামুল হক ভোলা ও মনির নামের ওই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এতথ্য জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাশ ভট্টাচার্য।

মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এর আগে শনিবার রাতে ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। দুজনের বাড়িই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার রোববার বিকেলে সিএমপি সদরদফতরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিতু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ওয়াসিম ও আনোয়ার সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।’

তিনি জানান, ওয়াসিম ও আনোয়ারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সাত থেকে আটজন মিলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। তবে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এখনও পরিষ্কার নয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

একটি পেশাদার অপরাধী চক্র এ কাজ করেছে—জানিয়ে ওইদিন ইকবাল বাহার আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কে বা কারা রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলেই এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে।’

শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ইকবাল বাহার বলেন, ‘বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদই করা হয়নি। তদন্তের স্বার্থে তার সঙ্গে মামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাদীর সঙ্গে আলোচনা, মামলা নিয়ে; দীর্ঘসময়, দীর্ঘক্ষণ, বিভিন্নভাবে সময় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, হবে।’

বাবুল আক্তারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাবুল আক্তার জড়িত এমন সন্দেহ হলে তো তাকে আটকই করা হতো। নজরদারি কেন?’ তার সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান ইকবাল বাহার।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার হলো—এমন প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘পরিষ্কার বিষয় হলো, গ্রেফতার এ দুজনই। এছাড়া এতোদিন যাদের আটক করা হয়েছে তাদের তথ্যের জন্য আনা হয়েছিল। তাদের কোনোভাবেই গ্রেফতার বলা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি টার্গেট কিলিং, এটি নিশ্চিত। জড়িতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কিন্তু কারা, কীভাবে, কেন—এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না।’

গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসির মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।

এসপি পদে পদোন্নতি পাওয়ার আগে বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা হিসেবে সফলতার সঙ্গে বেশ কয়েকটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ কারণে তার স্ত্রী হত্যায় জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে—এমন ধারণাকে সামনে রেখে তদন্তে নামে পুলিশ।

এরপর গত ১২ জুন এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামানকে তদন্তভার দেওয়া হয়। এর আগে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক কাজী রকিব উদ্দিন মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন।

এরইমধ্যে শুক্রবার রাতে মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে ‘আইজিপি স্যার ডেকেছেন’ বলে নিয়ে যায় পুলিশ। এর প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর বাসায় ফেরেন বাবুল আক্তার। পরে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জানান, মিতু হত্যার ঘটনায় করা মামলার বাদী হিসেবে এসপি বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *