গাজীপুরে সাংবাদিক নির্যাতনের মামলা আপোষ!

Slider গ্রাম বাংলা ফুলজান বিবির বাংলা

13466426_1748156925454304_4821229571746739989_n

 

গাজীপুর অফিস;  ২০ জুন জুয়ার আসরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত ৩ সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলা অবশেষে আপোষ হয়ে গেছে বলে কথা উঠেছে। ৪ লাখ  টাকার বিনিময়ে ওই আপোষ রফা সম্পন্ন হয়েছে বলে শুনা যাচ্ছে। আর এ ঘটনার পর আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খরচ পুলিশ বহন করেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

রোববার ইফতারের আগে এই মামলা আপোষ রফা সম্পন্ন হয়েছে বলে গোপন সূত্র নিশ্চিত করলেও কোন পক্ষ সত্যতা স্বীকার করছেন না।

সূত্র জানায়, ২০ জুন জুয়ার আসরে ৩সাংবাদিক আহত হওয়ার পর তাদেরকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করে গাজীপুর পুলিশ। সূত্র বলছে, পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর  মোঃ মমিন ওই চিকিৎসার খরচ বহন করেন। খবরটি চাপা থাকলেও তা প্রকাশ হয়ে যায় ২২ জুন।

২২ জুন আহতদের পক্ষে সকাল ১১টায় মানববন্ধনের  কর্মসূচি ঘোষনা করলেও তা হয়নি। মানববন্ধনের পূর্বে আহত সাংবাদিকদের পক্ষে  একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন। অতঃপর কোন ঘোষনা ছাড়াই মানববন্ধন স্থগিত হয়ে যায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সাংবাদিক জানান, বৈঠকে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও যথারীতি চিকিৎসার খরচ পুলিশ বহন করছে কিনা তা ইন্সপেক্টর  মোঃ মমিন ও জয়দেবপুর থানার ওসি রেজাউল করিমকে জিজ্ঞাসা করেন। বৈঠকে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের চিকিৎসার খরচ বহন করা হচ্ছে বলে সকলকে অবহিত করেন।

এ দিকে রোববার ইফতারের আগে মামলার বাদীর সঙ্গে আসামী পক্ষের একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে উপস্থিত একজন সাংবাদিক জানান, ৪ লাখ টাকায় আপোষ হয়ে গেছে মামলা। এখন পুলিশ মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠাবে। যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারেন।

সচেতন মহলের অভিমত, সাংবাদিক পিটিয়ে আহত করে যদি টাকার বিনিমিয়ে আপোষ হওয়া যায় আর চিকিৎসার খরচ যদি পুলিশ দেয় তবে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বাড়বে। জুয়ারীদের আক্রমনে সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনা আপোষ ও আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার টাকা পুলিশ দেয়ার কারণে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

মানববন্ধন আহবানকারী বাংলাভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি মীর ফারুক জানান, আপোষের বিষয় তিনি কিছুই জানেন না। যদি এ রকম হয়ে থাকে তবে তারা আমাদের ব্যবহার করলেন কেন বলে প্রশ্ন ছোঁড়েন মীর ফারুক।

অনেকে মনে করছেন, জুয়া হাউজি কি ভাবে চলছে তার একটু ধারণা তিন সাংবাদিক আহত হওয়া ও আহতের পরবর্তি ঘটনাই তা প্রমান করে দেয়। এই রকম অবস্থা হলে তিন সাংবাদিক গাজীপুরের সকল সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করলেন কিনা তা এখন নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে বলে কর্মরত সাংবাদিকদের অভিমত।

প্রসঙ্গত; ২০ জুন বিকাল ৫টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায় একটি চলমান জুয়ার আসরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৪ সাংবাদিক আহত হলেও পরে জানা যায় তিন জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন, মোহনা টিভির আতিকুর রহমান আমিন, আরটিভির আজহারুল হক ও জিটিভির আব্দুল্লাহ আল মামুন। জুয়ারীরা তাদের অমানবিক নির্যাতন করে সকলের ক্যামেরা ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে যায়। পুলিশ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করে। পরদিন সন্ধ্যায় জয়দেবপুর থানায় ২৪ জনকে আসামী করে মামলা হয়। এই মামলায় এজাহারভূক্ত কোন আসামী এখনো গ্রেফতার হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *