শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কিশোর-কিশোরী শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক ও আবেগিক বৃদ্ধির বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাইকোলজিস্ট নিয়োগের কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রফেশনাল সাইকোলজিস্ট না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ দায়িত্ব দেয়া হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক সুষ্ঠু বিকাশের প্রতি যথাযথ নজর দেয়ার জন্য শিক্ষক অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কিশোর-কিশোরী শিক্ষার্থীদের বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্প’ এর এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এ আহবান জানান।
প্রকল্পভুক্ত ঢাকা মহানগর, বরিশাল মহানগর, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ৩০০ স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ৫০টি মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্টদের অংশগ্রহণে প্রকল্পের কার্যক্রম অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ডাচ চার্জ দ্য এ্যাফেয়াসর মার্টিন ভন হগস্ট্রাটেন, জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনএফপিএ-এর প্রতিনিধি আর্জেনটিনা মেটাবেল পিচচ্নি এবং প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনও বক্তৃতা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, দেশে বিগত কয়েক বছরে নারীশিক্ষা প্রসারে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার একঘেয়েমি কাটানোর পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরব্যাপী নিয়মিত খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহকে সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সেসব প্রতিষ্ঠানের খেলাধুলা অবকাঠামো এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমের পারফরমেন্স বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, ডাচ সরকারের ১৮ কোটি টাকা অর্থায়নে প্ল্যান বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনএফপিএ এর সহায়তায় জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্প ২০১৪ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের বয়ঃসন্ধিকালীন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছে। প্রকল্পভুক্ত ৩৫০টি স্কুল ও মাদরাসার ১৪শ’ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষিত এসব শিক্ষক আগামী ২ বছরে তাদের ছাত্রছাত্রীদের নির্ধারিত বিষয়ের ওপর ২৬টি ক্লাশ নেবেন। উক্ত ক্লাশ কার্যক্রম ও প্রকল্পের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানদের অবহিত করতে রোববারের এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।