রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাচনে দায়িত্ব জালিয়াতি করে আনসার-ভিডিপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ৩ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। প্রতি ভোট কেন্দ্রে ১৭ জন করে দায়িত্ব পালনকারী প্রত্যেকের কাছে থেকে ৩০০ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ আছে এই টাকার হিস্যা পেয়েছেন উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক, টিআর শেলিনা বেগম, উজ্জল কুমার সরকার, মনিটরিং কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম।
এছাড়াও এই হাতিয়ে নেয়ার যোগসাজসে ছিলেন প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার দলনেতারা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
চলতি মাসের ৪ জুন ৬ষ্ঠ ধাপে রাজশাহী জেলার পবা ও মোহনপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে পবা উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে ৬৩টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১৭ জন আনসার ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী সদস্য। এছাড়াও পিসি একজন এবং এপিসি একজন নিয়োজিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার এই ৬৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৭১ জনকে ভোটকেন্দ্রের ডিউটির টাকা দেয়া হয়। আনসার সদস্য প্রত্যেককে এক হাজার ৬৩০ টাকা বরাদ্দের এক হাজার ৬০২ টাকা এবং পিসি ও সহকারী পিসিকে এক হাজার ৭৫০ টাকা বরাদ্দের এক হাজার ৭২২ টাকা করে দেন। অথচ তাদের প্রত্যেককে নিয়োগ নিতে গুণতে হয়েছে ৩০০ টাকা করে। সেই হিসেবে ভোটের দায়িত্বে নিয়োগপ্রাপ্তদের গুণতে হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৩০০ টাকা।
টাকা নিতে আসা হুজুরীপাড়ার খাদিজা, নামোপাড়ার রফিকুল ইসলাম, পারিলা পুড়া পুকুরের আমিনুল ইসলাম, দর্শনপাড়ার জলি বেগম, দামকুড়ার জনি ইসলাম, মতিউর রহমান, গোদাগাড়ি উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বিয়ানাবোনার সিরাজুল ইসলাম জানান, ডিউটিতে নিয়োগ পেতে তাদের প্রত্যেকের কাছে থেকে নুন্যতম ৩০০ টাকা ঘুষ নেয়া হয়।
এছাড়া যাদের পোশাক নেই তাদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা নেন। দলনেতা হড়গ্রামের ফজলুল হক মতিন জানান, এই অফিসে ঘুষের টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না। ভোটের ডিউটি ছাড়াও পূজা উৎসবে নিয়োগকৃত আনসারদের ঘুষের টাকা গুণতে হয়।
আনসার ভিডিপি উপজেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সেলিনা বেগম বলেন, ‘দলনেতারা যাদের নিয়োগ দিতে বলেন আমরা তাদেরকেই নিয়োগ দিয়ে থাকি। টাকা নেয়া না নেয়ার বিষয়ে তারাই ভালো জানেন।’
উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কে বা কারা কোথাই টাকা দিয়েছে তা আমার জানা নেই। টাকা নেয়ার বিষয়ে সত্যতা পেলে আমি সমস্ত টাকা খেশারত দিব।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল হক তোতা বলেন, ‘অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নিব।