কুমিল্লা সেনানিবাসের কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে করা অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও অসংলগ্ন’ বলে নাকচ করে দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।
বৃহ্স্পতিবার আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তনুর পরিবার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে ভিত্তিহীন ও অসংলগ্ন অভিযোগ করা হয়েছে যাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার অবকাশ রয়ে যাচ্ছে।’
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুঃখজনক তনু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলমান এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ তদন্তে পূর্ণাঙ্গ ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। সকল দেশবাসীর মতো দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও চায় প্রকৃত হত্যাকারীরা দ্রুত শনাক্ত হোক এবং তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে যথাযথ বিচারের সম্মুখীন করা হোক।’
সেনানিবাসের অভ্যন্তরে বসবাসরত অন্যান্য সকল পরিবারের মতই তনুর পরিবারকে সব রকম সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে— উল্লেখ করে আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজা-উল করিম শাম্মী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘তাদের [তনুর পরিবারের সদস্যদের] স্বাধীন চলাচলের কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের পর প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তা ও তদন্তের স্বার্থে তাদের বসবাস এলাকায় প্রহরী নিয়োগ করা হলেও পরবর্তীতে তা নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি সাপেক্ষে তুলে নেওয়া হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে সেনানিবাসের অভ্যন্তরে গমনাগমনের জন্য সবাইকে পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই সামরিক রীতি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করা বা কারো ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য নয়।’
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের একজন কর্মরত সদস্য যিনি অন্যান্য সকলের মতই সেনানিবাসের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা পাচ্ছেন- একথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তাকে বাস বা মোটর সাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ একটি ধারণাপ্রসূত ব্যাপার, যে ব্যাপারে তনুর পরিবার কাউকেই এ পর্যন্ত কোনো কিছু অবগত করেনি। এ ব্যাপারে ইয়ার হোসেনকে তার উপরস্থ কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও), যিনি বেসামরিক প্রশাসন হতে প্রেষণে নিয়োজিত একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা, জিজ্ঞাসাবাদ করলে ইয়ার হোসেন নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হন। তাছাড়া তিনি এ ব্যাপারে এতদিনে সেনা কর্তৃপক্ষ বা তদন্তকারী কাউকেই অভিযোগ করেনি, যা গুরুত্ব বিবেচনায় অসংলগ্ন প্রতিপন্ন হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘তনুর পরিবার সেনাবাহিনীর অন্যান্য সকল পরিবারের মত এখনো সেনানিবাসের ভেতরে বসবাস করছেন। সেনা কর্তৃপক্ষ তনু হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ তনুর শোকাহত পরিবারকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানে বদ্ধপরিকর।’