*////বাংলার কৃষক মাঠে হাল চাষ করছে, জেলে মাছ ধরছে, তাঁতী সূতা বুনছে, বউ ঝি তাদের থালা বাসন মাজছে —– সাধারনভাবে সবই চলছে…… তারা কেউ জানতেও পারলো না বাংলার স্বাধীনতা সূর্য পলাশীর প্রান্তরে অস্তমিত হয়ে গেলো দু’শ বছরের জন্য…. আজও কি তেমনই কোন অশনি সংকেত জাতির ভাগ্যাকাশে?? আমরা যে যার কাজে ব্যস্ত??////*
২৩শে জুন!
পলাশীর আর্তনাদ!
হায় পলাশী, অভিশপ্ত পলাশী!!
বিনাশুল্কে বাণিজ্যের এ কি পরিনতি!!
ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বণিকের মানদন্ড,
নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের নাগিনী ফণায় পরিনত হলো
শাসকের ভয়ানক বিষাক্ত রাজদন্ডে!!!!!!
কালো নাগের নীল বিভীষিকা কাশিমবাজার কুটির অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়লো বাংলা বিহার উড়িষ্যার মেঘাচ্ছন্ন মধ্য গগনে!!! চারদিকেই মীরজাফরগংদের নিশ্বাসে আজ লন্ড ভন্ড মুর্শিদাবাদের দুর্ভেদ্য প্রাচীর!!! স্বাধীনতার সোনালি সূর্য অন্তিম প্রহরের ঘনকৃষ্ণ তিমিরে ঢাকা পড়েছে পলাশীর আম্রকানে!!!
হায়, অভিশপ্ত পলাশী!
কে দেবে আশা!!
কে দেবে ভরষা!!!
তাইতো এই মনে—
কান্ডারী! সম্মুখে তোমার পলাশীর প্রান্তর
বাঙ্গালির রক্তে লাল হয়েছে ক্লাইভের খঞ্জর।
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়! ভারতের দিবাকর,
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পুনর্বার।
দুর্গম গিরি! কান্তার মরু! দুস্তর পারাবার–
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রীরা হুশিয়ার।
——-কাজী নজরুল ইসলাম।