চট্টগ্রাম কলেজে আবারও সংঘর্ষে জড়াল ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। এতে মনির (২২) ও হুমায়ুন (২২) নামের দুজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন আরও কয়েকজন।
রোববার দুপুরে নগরীর চকবাজার এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ দুজনসহ আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে বাধা দেয় পুলিশ-ফোকাস বাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা দুপুরে মেয়রের নামে স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এসময় কলেজ ফটকে অবস্থান করা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী গ্রপ তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে হাতাহাতির একপর্যায়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। উভয়পক্ষই লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর চড়াও হয়। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালায়।
তারা আরও জানায়, এরপর নাছির অনুসারী নেতাকর্মীরা কলেজের অদূরে গণি বেকারি মোড়ে ও মহিউদ্দিন অনুসারী নেতাকর্মীরা কলেজ ফটকে অবস্থান নেয়। মাঝে মাঝে দু’পক্ষে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। এতে উভয়পক্ষে কয়েকজন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে ও আহত একজনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় মনির (২২) ও হুমায়ুন (২২) নামে দু্ই জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এবং নিঝুম পারিয়াল নামে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের ক্যাজুয়েলিটি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
গতকালও (শনিবার) শোডাউন দিতে গিয়ে ছাগলীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজ আহমেদ জানান, আগের দিনের ঘটনার জের ধরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’
এদিকে, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কারণে কলেজের আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন।
চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার জানান, কিছু বহিরাগত কলেজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কলেজের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে সংঘর্ষের কারণে ভর্তি কার্যক্রমে বড় ধরনের সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নগরীর চকবাজার এলাকায় রাস্তার দু’পাড়ে চট্টগ্রাম কলেজে ও হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজের অবস্থান। প্রায় তিন দশক কলেজটি দুটি ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত ১৬ ডিসেম্বর নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রণির নেতৃত্বে এগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় ছাত্রলীগ। কিন্তু পরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিয়মিত বিরতিতে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা।