বাংলাদেশ রেলওয়েতে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। জাতীয় পার্টির এ কে এম মাইদুল ইসলাম ও সরকারি দলের সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে আজ শনিবার সংসদে এ কথা বলেছেন মন্ত্রী।
এ ছাড়া আজকের প্রশ্নোত্তর পর্বে যাত্রীবাহী বগি, রেলওয়ের জমি দখল, রেলওয়ের লাভ-লোকসান, বস্ত্রকলের লোকসান, পাটের রপ্তানি-আয়, অবৈধ যানবাহন বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
রেলমন্ত্রী বলেন, রেলওয়েতে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন লাইন চালুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রস্তাব প্রণয়ন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সমীক্ষা প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভবিষ্যৎ চাহিদার বিবেচনায় রেলওয়ের মাধ্যমে মাছ, মাংস, শাকসবজি পরিবহনের জন্য রেফ্রিজারেটর বগি কেনার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও রেলমন্ত্রী জানান।
জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমরের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রেলওয়ের ১ হাজার ৪৭১টি যাত্রীবাহী বগি রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়। চাহিদা পূরণের জন্য পর্যায়ক্রমে নতুন বগি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে রেলওয়ের ২৮২টি লোকোমোটিভ ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে ১৮৬টি মিটার গেজ ও ৯৬টি ব্রডগেজ।
পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক বলেন, সারা দেশে রেলওয়ের জমির পরিমাণ ৬১ হাজার ৮২০ দশমিক ৯৭ একর। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৯১ দশমিক ৩৯ একর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান কি না, সেলিনা বেগমের এ-সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, সরকার লাভ-লোকসান বিবেচনায় নিয়ে ট্রেন পরিচালনা করে না। ট্রেনে মানুষ সাশ্রয়ী ভাড়ায় যাতায়াতের সুযোগ পায়। রেলে প্রতিবছর জ্বালানি তেল ও যন্ত্রপাতির দাম বাড়ে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়াতে হয়। কিন্তু ট্রেনের ভাড়া প্রতিবছর বাড়ানো যায় না।
নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক জানান, গত ১৪ বছরে বস্ত্রকলগুলো মোট ৭৮২ কোটি ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছে।
নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত বাংলাদেশ পাট রপ্তানি করে ৮ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা আয় করেছে।
সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রেক্ট্রোরিফ্লেকটিভ নম্বর প্লেট প্রবর্তন করায় রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহন ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরে অবৈধ যানবাহন নেই বললেই চলে।
প্রশ্নোত্তরের আগে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে বেলা পৌনে ১১টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।