আবারো দরপতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

 

DSE-CSE-logo_bangalnews2420160617195329

 

 

 

 

ঢাকা: উত্থানের উঁকি দিয়ে আবারো দরপতনের বৃত্তে আটকা পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। নতুন অর্থ বছরের (২০১৬-১৭) প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সঙ্গে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, মন্দা পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো উদ্যোগ না থাকায় নতুন করে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছে বিনিয়োগকারীরা।

এর পাশাপাশি রমজান-ঈদকে সামনে রেখে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কিছু লাভ পেলেই শেয়ার বিক্রি করছেন। এর ফলে শেয়ার কেনার চেয়ে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেশি থাকায় দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে।

বাজেট পরবর্তী বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজেট ঘোষণার পর দুই সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে মোট ১০ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কার্যদিবসই দরপতন হয়েছে। আর বাকি চার কার্যদিবস সূচক বেড়েছে সামান্য কয়েক পয়েন্ট করে। পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও বাজার মূলধন। তবে লেনদেন কিছু বেড়েছে।

দুই সপ্তাহের এর মধ্যে সর্বশেষ সপ্তাহে (১২-১৬জুন) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মোট পাঁচ কর্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দু’দিন সূচক বেড়েছে, আর কমেছে তিন কার্যদিবস। আগের সপ্তাহে একই অবস্থা ছিলো।

আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ১ হাজার ৯৭১ কোটি ৮৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১ হাজার ৭২৫ কোটি ৭৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫০২টাকার। যা শতাংশের হিসেবে ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। তবে বাজেট ঘোষণার আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিলো ২ হাজার ১৬৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৮ হাজার ১৯৩ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১ হাজার ৪১২ কোটি ৮১লাখ ২৮ হাজার ৫০২ টাকা। তবে তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ২ হাজার ১৯ কোটি টাকা।

তিন সূচকে পথ চলা ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের ২৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৩৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহে ২৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪১৮ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১১০টির,  কমেছে ১৯২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম। আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিলো ৭৯টির, কমেছে ২১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিলো ২৮টি শেয়ারের।

একই সময়ে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ১২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১২৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

আর (১২-১৬ জুন) সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসইএক্স ৪০ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ২৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহে ৫৫ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ২৭৪ পয়েন্ট অবস্থান করে ছিলো।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭টির, কমেছে ১৫৫টির আর অপরিবর্তিত ছিলো ৩১ কোম্পানির শেয়ারের দাম। আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিলো ৭৬টির, কমেছে ১৭০টির, আর অপরিবর্তিত ছিলো ২০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

বাজারের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য খুজিস্তা নূর-ই নাহরীন  বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা মন্দায় পুঁজিবাজারে চরম ক্রান্তিকালে চলছে। পুঁজিবাজারের এই দুঃসময়ে সরকারে প্রস্তাবিত বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা দরকার ছিলো।

কিন্তু বাজেটে কিছুই না থাকায় বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনিহা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রমজান মাসকে কেন্দ্র করে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার ফলে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *