এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর জোট ‘আসেম’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গোলিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ ও ১৬ই জুলাই মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটরে দু’দিনের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দুই মহাদেশের ৫১ রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান অংশ নেবেন। ওই জোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ২৮ দেশসহ ইউরোপের মোট ৩০টি দেশ রয়েছে। সেখানে এশিয়ার ২১টি দেশ ছাড়াও আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আসিয়ান সচিবালয় এর সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান নেতৃত্বের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গোলিয়ার আসেম বৈঠকের সাইড লাইনে এশিয়া ও ইউরোপ থেকে যাওয়া বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী। সে মতেই তার অ্যাপয়েনমেন্ট চূড়ান্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আসেমে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল যোগ দিচ্ছেন। তিনি গত মাসে জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭ আউটরিচ প্রোগ্রামেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি। আসন্ন মঙ্গোলিয়া সামিটের সাইড লাইনে হাসিনা-মার্কেল দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে বলে বার্লিন এরইমধ্যে ঢাকাকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রভাবশালী সদস্য জার্মানির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঢাকা-বার্লিন পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক একটি টার্নিং পয়েন্ট। গত এপ্রিলে বার্লিন সফর করেন পররাষ্ট্র সচিব। সেই সময়ে স্টেট সেক্রেটারি লেভেল বৈঠক ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে তার মতবিনিময়ের সুযোগ ঘটে। যদিও বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এবং অন্য কিছু বিষয়ে দেশটির নিজস্ব মূল্যায়ন ও অবস্থান রয়েছে। তারপরও সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সার্বিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার তাগিদ আসে দুই দিক থেকে। দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের প্রায় ৫ শ’ অবৈধ অভিবাসীকে দেশে ফিরিয়ে আনতেও রাজি হন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনা ও সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেয়া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য মতে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচন প্রশ্নে জার্মানির নিজস্ব অবস্থান থাকলেও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বার্লিনের তরফেও ধীরে হলেও এতে ইতিবাচক সায়ই মিলছে। সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টার ওই ধারাকে অব্যাহত রাখতে চায় ঢাকা। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর মঙ্গোলিয়া সফরের আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বার্লিন সফর করতে পারেন। চলতি মাসেই সফরটি হতে পারে বলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র মানবজমিনকে আভাস দিয়েছেন।