একটি শিশু তার পরিবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে। পারিবারিক শিক্ষাই শিশুর আচার-ব্যবহার, মন-মানসিকতা, সামাজিকীকরণ ও চরিত্র গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। পরিবারে বাবা-মা বা অন্যান্য সদস্যরা যে আচরণ করবে, একটি শিশু সে রকম আচরণই করবে। সেটাই স্বাভাবিক।
সহিংস হয়ে কোনো শিশু জন্ম নেয় না। নানা কারণে সে পরবর্তী সময়ে সহিংস হয়ে ওঠে। একটি ছেলেশিশু যদি দেখে বাবা তার মাকে মারধর করছে, তাহলে বড় হয়ে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে একই আচরণ করবে। কারণ, এটাই সে শিখেছে। অনেক পরিবারে শাসনের নামে শিশুকে মারধর করা হয়। আবার অনেক সময় কোনো অপরাধের শাস্তি হিসেবে শিশুকে খেতে দেওয়া হয় না। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এসব সহিংস আচরণ শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একসময় সে নিজে সহিংস হয়ে ওঠে। ফলে ঘটে মর্মান্তিক সব ঘটনা।
পরিবারের অভিভাবকেরা যদি তাঁদের সন্তানদের সততা, নৈতিকতার শিক্ষা দেন এবং সেভাবে কঠোর অনুশাসনের মধ্যে গড়ে তোলেন, তবে ওই সন্তানেরা কখনো অপরাধ করতে পারে না।
কাজেই পরিবার থেকে অস্থিরতা দূর করতে হবে। পারিবারিক বন্ধন জোরদার করতে হবে। বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের ভালোবাসবেন। তাদের নৈতিক শিক্ষা দেবেন, সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেবেন। পরিবার থেকে ভুল শিক্ষা নিয়ে কেউ যখন বাইরের সমাজে পা রাখে, তার কাছ থেকে আমরা তখন আর কী আশা করতে পারি। সে যখন আবার পরিবারের কর্তা বা কর্ত্রী হবে, তখন সেও তার বাচ্চাকে ভুল শিক্ষা দেবে। অনিয়ন্ত্রিত, নিরাপত্তাহীন পরিবেশ যেভাবে মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করে, তেমনি নিরাপদ পরিবেশ সন্তানের সুস্থ বিকাশের পথ সহজতর করে দেয়।