রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ফের পাঁচদিনের রিমান্ডে আসলাম চৌধুরী

Slider রাজনীতি

 

005_212584

 

 

 

 

 

ঢাকা: রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর ফের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (০৮ জুন) সাতদিনের রিমান্ড শেষে আসলাম চৌধুরীকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ফের সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুল হক। শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের আদালত।

এদিকে সুনির্দিষ্ট ধারা ও অভিযোগে মামলা হওয়ায় আসলাম চৌধুরীকে ৫৪ ধারার মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ বিষয়ে পরে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।

গত ৩১ মে থেকে রাজধানীর গুলশান থানায় দায়ের করা মামলাটিতে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি।

আসামিপক্ষে শুনানি করেন আসলাম চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।

গত ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর)। পরে তাদেরকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন ১৬ মে ৫৪ ধারায় (মোসাদ কানেকশনে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ) গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের দু’জনকে দশদিন করে রিমান্ডে আনার আবেদন জানানো হয়। আদালত সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৪ মে সাতদিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওইদিন আসলামকে আদালতে হাজির করে মতিঝিল ও লালবাগ থানায় দায়ের করা নাশকতার দুই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এ দুই মামলায় আসলামের ১০ দিন করে মোট ২০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে ডিবি। আগামী ১৫ জুন এ রিমান্ড আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর গত ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাটি। দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় ডিবি’র ইন্সপেক্টর গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের সন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বলা হয়, আসলাম চৌধুরী গত ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহিভূত রাষ্ট্র ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যার কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন যা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

ভারতে গিয়ে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ‘সরকার উৎখাতের’ জন্য আলোচনা করার অভিযোগ রয়েছে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। দিল্লি ও আগ্রার তাজমহল এলাকায় ইসরায়েলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা-সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবি সম্প্রতি প্রকাশিত হলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় চলছে।

২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন সাবেক জামায়াত ও শিবির নেতা আসলাম চৌধুরী। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক হন। এর আগে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন শেষে যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *