চট্টগ্রাম : গেল বছর নগরীর বায়েজিদে শেরশাহ ন্যাংটা ফকিরের মাজারে ঢুকে কথিত পীরসহ দু’জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর ঈদুল আজহার আগের দিন সদরঘাট বাংলাবাজার এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় গ্রেনেড বিস্ফোরণের দুই ছিনতাইকারী ও এক ব্যবসায়ী নিহতের আরেকটি ঘটনা ঘটে। দুটোই দেশব্যাপী আলোচিত হয়।
কর্ণফুলী থানার খোঁয়জনগর এলাকার একটি ভবনের নিচ তলায় জেএমবি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ক্লুলেস ঘটনার ‘ক্লু’ উদঘাটন করা হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। এরপর থেকেই জঙ্গিদের টার্গেটে পরিণত হন তিনি। আর এই আক্রোশ মেটাতেই তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকে (৩২) জঙ্গিরা হত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পিবিআই চট্টগ্রাম প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহমেদ খান বলেন, ‘সকাল ৬টা ৩৫ মিনিট দিকে বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে ছেলেকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে যাওয়ার পথে তিনজন মোটর সাইকেল আরোহী তাকে ধাক্কা দেন। এরপর তারা ছুরিকাঘাত করে পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি মাহমুদা আক্তারের মাথার বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান।’
তিনি আরো বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ধরন ও পূর্বের জঙ্গিদের হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে এটির হুবহু মিল রয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ধারণা করছি জঙ্গিরা এ হত্যাকাণ্ড সাথে জড়িত। তবে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। খুনিদের ধরতে অভিযান চলছে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার। এসময় তিনি হত্যাকাণ্ডের সাথে জেএমবি জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান। প্রাথমিকভাবে তিনিও এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জঙ্গিরা জড়িত বলে মনে করছেন।
অপরাধ দমনে আলোচনায় থাকা বাবুল আক্তার আলোচনায় আসেন গত বছর নগরীর কর্ণফুলী থানার খোঁয়জনগর এলাকার একটি ভবনের নিচ তলায় জেএমবি আস্তানায় অভিযান চালাতে গিয়ে। যেখানে তিনি গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। সেখানে তাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেডও ছুড়ে মেরেছিল নিহত জঙ্গি নেতা জাবেদ। ভাগ্যক্রমে বাবুল বেঁচে গেলেও জঙ্গিদের টার্গেটে পরিণত হন তিনি।
এছাড়া গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাটহাজারীর আমান বাজারের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জেএমবি নেতা ফারদিনের বাসা থেকেও বিপুল বিস্ফোরক ও অত্যাধুনিক স্নাইফার রাইফেল উদ্ধার করে আলোচনায় ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, এসপি বাবুল আক্তার গত বৃহস্পতিবার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সিএমপি ছেড়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগদানের জন্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি চট্টগ্রামে জেএমবির সামরিক প্রধান জাবেদসহ বেশ ক’জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি দেশে নতুন করে জঙ্গিবাদের উত্থানটি আবিষ্কার করেছিলেন।