প্রধানমন্ত্রী এ সময় সমগ্র বিশ্বেই ধাপে ধাপে নিজস্ব দূতাবাস ভবন গড়ে তোলার জন্য তার সরকারের পদক্ষেপের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, তার সরকার সৌদি আরবে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেদ্দায় কনসুলেট ভবন নির্মাণ করবে।
শনিবার রাতে রয়্যাল কনফারেন্স প্যালেসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি ভবন ও সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে ৫ দিনের সরকারি সফরে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে বিশাল ভূমিকা রাখছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কাজেই এই প্রবাসীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের দায়িত্ব।’
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত রাষ্ট্রদূতদের ভালভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ দেখার নির্দেশ প্রদান করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান এবং জাপানে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ৯৬-২০০১ মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর অষ্ট্রেলিয়াতেও এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। অথচ পরবর্তী সরকার সেখানে ভবণ নির্মাণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সেখানে ভবন নির্মাণের জমির প্রায় অর্ধেকটাই হারিয়ে ফেলেছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশির সর্বোচ্চ সততা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করারও আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, তিনি গণমানুষের অধিকার আদায়ে এবং তাদের জীবন মান উন্নত করার প্রচেষ্টায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন।
এই মহান নেতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার ব্যক্তিগতভাবে কিছুই চাওয়া পাওয়ার নেই এবং তার সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি এবং অন্যান্য খাতের উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
দেশের সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের উন্নয়নে এমনভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে যাতে করে বাংলাদেশ বিশ্বে একদিন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
বিশ্বে বাংলাদেশ আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখে না।
শেখ হাসিনা দেশের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং দেশে আরো বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালনাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ উপস্থিত ছিলেন।