শেষ হওয়ার পথে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী নির্বাচন। ছয় পর্বের নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোটগ্রহণ আজ শনিবার বিকেল চারটায় শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা। ফলাফল ঘোষণার মধ্যে দিয়ে নবম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হবে।
ষষ্ঠ পর্বে আজও বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ফেনী, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীতে একজন করে নিহত হন। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদীতে পঞ্চম পর্বের নির্বাচনে আহত এক ব্যক্তি আজ দুপুরে হাসপাতালে মারা গেছেন। আজ ৬৯৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ছয় ধাপে অনুষ্ঠিত ৩৯৬৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১১৩ জন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
অবশ্য এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় ভিত্তিতে চেয়ারম্যান পদে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। এর আগে স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম স্তর ইউনিয়ন পরিষদে নির্দলীয় নির্বাচন হতো।
এর আগে দেশে আট বার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল ১৯৮৮ সালের ইউপি নির্বাচন। ওই নির্বাচনে প্রতিবেদন ভেদে ৮৫ থেকে ৯৫ জন মানুষ মারা গিয়েছিল। ওই সময় স্বৈরাচার এইচ এম এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৩ সালের নির্বাচনেও ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ডেমোক্রেসিওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৫১ দিনব্যাপী ওই নির্বাচনে ৮০ জন প্রাণ হারায়। অবশ্য কোনো কোনো প্রতিবেদন এই সংখ্যা ৭২ বলেও উল্লেখ আছে।
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সবচেয়ে কম সহিংসতার ঘটনা ঘটে। যদিও ওই নির্বাচনে প্রতিবেদন ভেদে ২৭ থেকে ৩৪ জন মারা গিয়েছিলেন বলে উল্লেখ আছে।
সবচেয়ে প্রাণঘাতী নির্বাচনের পাশাপাশি এই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ারও রেকর্ড গড়েছে। এবারের নির্বাচনে ২২০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বা হওয়ার পথে রয়েছেন। এঁরা সবাই সরকারদলীয় প্রার্থী। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ১০০ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ছাড়া এই নির্বাচনে বিএনপি সবগুলো ইউনিয়ন পরিষদে প্রার্থী দিতে পারেনি। ৫৫৪টি ইউনিয়নের বিএনপির কোনো প্রার্থী ছিল না।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম