ঢাকা : অনিবন্ধিত সিমের আউটগোয়িং বন্ধ হওয়ার ২৪ ঘন্টা হয়নি এখনো। এর মধ্যেই সিম অপারেটরগুলো নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক অনিবন্ধিত সিমে মিলছে সব সুবিধা আবার পুনঃনিবন্ধন করেও অনেকে নেটওয়ার্কের দেখা পাচ্ছেন না। এবারই প্রথম কোন সরকারি সিদ্ধান্তে অনিবন্ধিত সিমের আউটগোয়িং বন্ধ করা হয়।
সকাল থেকেই এয়ারটেলের গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হন। এখন পর্যন্ত অনেক মোবাইলে এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। শুধু আউটগোয়িং বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও সিমে ইমার্জেন্সি কল করার সুযোগ ছাড়া অন্য কাজ করা যাচ্ছে না।
তবে এয়ারটেল কতৃপক্ষ জানান, ‘এয়ারটেলের একটি প্রধান মোবাইল সুইচিং সেন্টার MSC09 এ আকস্মিক যান্ত্রিক গোলোযোগের কারণে দক্ষিণ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের এয়ারটেল গ্রাহকরা সাময়িক নেটওয়ার্ক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন না করার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নাই। এয়ারটেল টিম দ্রুততা এবং একাগ্রতার সাথে এই সমস্যার নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
রবি গ্রাহকরাও কিছু কিছু সিমে এ ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেককে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়। বান্দরবানে বসবাসরত রাসেল খান নামের একজন ছাত্র ফেসবুকে কমেন্ট করেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রবির উপর শনির নজর পরেছে। তাই যত তারাতারিই সম্ভব মোবাইল-সিম দু টায় পবিত্র পানি দিয়ে ধোয়া উচিত।’
এমডি ফয়সাল সিসিডি নামে আরেক ছাত্র ফেসবুকে কমেন্ট করেন, ‘আমি বায়োম্যট্রিক করিনি কিন্তু আমার সিমটা বন্ধ হয়নি।কেন??’ সিম পুনঃনিবন্ধন না করেও সিমের সব সুবিধা ব্যবহার করতে পারছেন বারিধারায় বসবাসরত মোহাম্মদ আবরার। নুরুল আলম রাজা সহ এভাবে আরো অনেকেই ফেসবুকে নিজের সিম অনিবন্ধিত রেখেও সব সুবিধা ব্যবহার করার কথা জানান।
গ্রামীণফোন ব্যবহারকারী জঘন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড.সিদ্ধার্থ শঙ্কর জোয়ার্দার বলেন, ‘আমি প্রথমদিকেই গ্রামীণফোন পুনঃনিবন্ধন করেছিলাম। তবুও এখন আমার সিমে কোন ফোন আসছেও না আবার আমি নিজেও কোন ফোন করতে পারছি না। অথচ সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমার সিম পুনঃনিবন্ধিত না হলেও আমার ইনকামিং সুবিধা পাওয়ার কথা।’
বাংলালিংক সিম ব্যবহারকারী চঞ্চল মাহমুদ সকালে আউটগোয়িং কল করতে না পারলেও দুপুর থেকে তার আউটগোয়িং সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে বলে জানান।
জাগোনিউজে কর্মরত সাংবাদিক তাবাসসুম তাসনিম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘আমি তো সিম নিবন্ধন করি নাই। তবুও তো সিম বন্ধ হয় নাই। সকালে অবশ্য নেটওয়ার্ক পাইনি। কিন্তু এখনতো দিব্যি চালু আছে। তাহলে এত বলে বলে সিমগুলি নিবন্ধন করিয়ে কি লাভ হলো????’
দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল রাগের ইমো যুক্ত করে স্ট্যাটাস দেন,‘আমি মেট্রিক পাস তবুও সিমের নেটওয়ার্ক হারাইয়া যাইয়েছে ক্যান? কুনু জাগায় কতা কতি পারছি না!’
পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেমটি নিয়ন্ত্রনে আনতে হয়তো কিছুটা সময় লেগে যাবে। তবে এই অবস্থায় গ্রাহক হয়রানির জন্য মোবাইল অপারেটরগুলো সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অনিবন্ধিত সিমগুলোর কি হবে অথবা আজ থেকে পুনঃনিবন্ধন করা সিমগুলো
কবে থেকে ব্যবহার করা যাবে তার ব্যাপারে সরকার থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি এখনো।
গ্রাহকরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চান। নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান হয়ে আগের মতো সব নেটওয়ার্ক ব্যবহারের উপযোগি হয়ে উঠবে বলে আশা করেন মোবাইল অপারেটরগুলোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।