ঢাকা; নবম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম পাঁচ ধাপে ঘোষিত ৩ হাজার ২৯০টি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ২ হাজার ১৯৫টিতে। দলটি এককভাবে ৬৭ শতাংশ ইউপিতে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি জয় পেয়েছে ৩১৫টিতে। অর্থাৎ বিএনপি ১০ শতাংশেরও কম ইউপিতে জয় পেয়েছে।
এবারের নির্বাচনের পাঁচ ধাপে ৬৯৭টি ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। যদিও তাঁদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। এর বাইরে জাতীয় পার্টি (জাপা) ৪১টি, জাসদ ৭টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ৪টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৪টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জাকের পার্টি ও সিপিবি একটি করে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জিতেছে।
নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দলীয় প্রার্থীর জয়ের কারণ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা। উন্নয়নের প্রতি যে মানুষের সমর্থন আছে, তা ফলাফলে প্রতিফলন হয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জরিপ সংস্থাও এই আস্থার কথা বলেছে। ৮০ ভাগ মানুষের আস্থা এই সরকারের প্রতি আছে। এ কারণে তাঁদের দল এত ভোট পেয়েছে।
জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেমন ভোট হয়েছে, তা সবাই দেখেছে। এই ভোটের ফল নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। পুরো নির্বাচন–প্রক্রিয়া নষ্ট হয়েছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে ভোট কারচুপির মহোৎসব করেছে।
প্রথম ধাপে ৬৮৫টি ইউপির মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫১৮টিতে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয় ধাপে, আওয়ামী লীগ ৬২৯টি ইউপির মধ্যে ৪৪৭টিতে জিতেছে। শতকরা হিসেবে ৭১ শতাংশ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান হয়েছে। তৃতীয় ধাপে, ৬১০টির মধ্যে ৩৯৫টিতে জয়ী হয়েছে। এটি মোট চেয়ারম্যান পদের প্রায় ৬৫ শতাংশ। চতুর্থ ধাপে ৬৪ শতাংশ চেয়ারম্যান পদে জিতেছে আওয়ামী লীগ। এই ধাপে ৬৮৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪৩৯টিতে জিতেছে দলটি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে ৫৮ শতাংশ ইউপিতে জয় পেয়েছে দলটি। ঘোষিত ৬৮৩টি ইউপির মধ্যে ৩৯৬টিতে জয় পেয়েছে দলটি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রথম ধাপে প্রায় ৭ শতাংশ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছিল। এরপর প্রতিটি ধাপে দলটি প্রায় ১০ শতাংশ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পাচ্ছে। বিএনপি প্রথম ধাপে ৪৭টি, দ্বিতীয় ধাপে ৬১, তৃতীয় ধাপে ৬০, চতুর্থ ধাপে ৭০ এবং পঞ্চম ধাপে ৬৭টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছে।
তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম ধাপের তুলনায় পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের জয় কমতে থাকলেও এখনো তা অস্বাভাবিক। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, কারা জয়ী হচ্ছে এটি বিষয় নয়। বিষয়টি হলো নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হচ্ছে না। কারচুপি হচ্ছে। ফলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। তিনি বলেন, এই ভোটে স্বাভাবিক পন্থায় বিজয়ী হচ্ছেন, এই সংখ্যা বেশ কম। একটি বড় অংশ কারচুপি, বিনা ভোটে নির্বাচিত হচ্ছে, এটা খারাপ দিক।