জামালপুর সংবাদদাতা জানান, পঞ্চম ধাপে আজ শনিবার ইউপি নির্বাচনে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। নিহতরা হলেন, জিয়াউর রহমান (৩৬), নূরুল ইসলাম (৬৫), নবিরুল ইসলাম (১৫) ও আব্দুল মাজেদ (১৬) নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২৫জন।
জাল ভোট, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও সংঘর্ষের ঘটনায় জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খোটারচর এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও কান্দিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র এবং জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ভাটারা ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র স্থগিত ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
নিহত জিয়াউর রহমান দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কুতুবেরচর গ্রামের নরুল ইসলামের ছেলে। নিহত নূরুল ইসলামের পিতা আব্দুস সাত্তার। নিহত নবিরুল ইসলামের পিতা আমজাদ হোসেন। নিহত আব্দুল মাজেদের পিতা আফজাল হোসেন। তিনজনের বাড়ি একই ইউনিয়নের শেকপাড়া গ্রামে।
এছাড়া জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে কুদ্দুছ নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউ- শর্টগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে পুলিশ। একই উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের শিশুয়া বাঘমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থী ও আ.লীগ বিএনপির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাকিরুজ্জামান রাখালের সমর্থকরা বিভিন্ন ভোট দখল করে নেয়। এ সময় বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খোটারচর এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও কান্দিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাকিরুজ্জামান রাখালের সমর্থকদের সাথে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহানের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন।
নোয়াখালী সংবাদদতা জানান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয় নম্বর রাজগঞ্জ ইউনিয়নে কেন্দ্র দখলের সময় দুইপক্ষের সংঘর্ষের সময় সৈয়দ আহমদ (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক বলে জানা গেছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের ধাওয়া দেয়। ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন সৈয়দ আহম্মেদ। ধাওয়ার মধ্যে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পটিয়া সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কর্ণফুলী থানার বড়উঠান ইউনিয়নে কেন্দ্রে সংঘর্ষের সময় মো.ইয়াছিন নামে এক সদস্য প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।ইয়াছিন বড়উঠান ইউনিয়নের ৬ নম্বর শাহ মীরপুর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন।
শনিবার দুপুর ১টার দিকে বড়উঠান ইউনিয়নের শাহ মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন তিনজন। গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়াছিন নামে একজনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন।
এছাড়া শরীফ (৩২) ও আলম (২০) নামে দুজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তিনি জানান।