বাংলাদেশের রাজকোষ চুরির পর তীব্র ভাবমূর্তি সঙ্কটে পড়েছে ব্যাংকিং খাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরাপত্তা দেয়া সংস্থা সুইফট। সেই ভাবমূর্তিকে পুনর্গঠনের জন্য এখন তারা নতুন নিরাপত্তা প্রোগ্রাম চালু করার পরিকল্পনা করছে। ব্রাসেলসে আর্থিক সেবাখাত বিষয়ক এক সম্মেলনে এ বিষয়টি প্রকাশ করার কথা রয়েছে দ্য সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিনান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনের (সুইফট) প্রধান নির্বাহী গটফ্রাইড লেব্রান্ডটের। তিনি সেখানে বলবেন, এ সপ্তাহের শেষের দিকে ৫-দফা পরিকল্পনা চালু করবে সুইফট। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, সুইফট মেসেজ বা বার্তার মাধ্যমে ব্যাংকগুলো একটি থেকে আরেকটিতে অর্থ স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট সিস্টেম হ্যাক করে চোরেরা নিউ ইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বিপুল অংকের অর্থ ছাড়ের বার্তা পাঠায়। তার মধ্যে শ্রীলংকায় একটি নামের বানান ভুল থাকার কারণে সেখানে পাঠানো বড় একটি অংকের টাকা স্থানান্তর আটকে যায়। কিন্তু তারা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানান্তর করে তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।
হ্যাকাররা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট কোড ভেঙেই চুরি করেছে এমন নয়। গত বছর হ্যাকাররা একই রকম হামলা চালায় ইকুয়েডরের ব্যাংকো ডেল অস্ট্রোতে। হামলা চালায় ভিয়েতনামের ব্যাংক তিয়েন ফং ব্যাংকে। তবে তার সফল হতে পারে নি। হ্যাকারদের এই হামলার প্রেক্ষিতে বেলজিয়ামভিত্তিক সুইফটের ওপর ব্যাংকিং খাতগুলোর আস্থায় ঘাতটি দেখা দেয়। রয়টার্স বলছে, ওই সম্মেলনে লেব্রান্ডট বলবেন- বাংলাদেশের অর্থ চুরি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা একটি বিরাট বিষয়। এটা ব্যাংকিং খাতের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তাই সুইফট ইনফরমেশন শেয়ার, সুইফটকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার, সফটওয়ার ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়ে বহুলাংশে উন্নতি করবে, যাতে অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় প্রতারণা হলে তা ধরা যায়। একই সঙ্গে সুইফট আরও কড়া গাইডলাইন বা নির্দেশনা দেবে, যা ব্যবহার করবেন অডিটর ও রেগুলেটররা।