আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করার সময়সীমা যখন শেষ হতে যাচ্ছে ঠিক তার আগে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এই বিতর্ক তৈরি হয়েছে গ্রাহকের নিরাপত্তা নিয়ে।
চট্টগ্রামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত প্রায় ১৫০ টি সিম জালিয়াতির পর গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক আবারো মাথাচাড়া দিয়েছে।
কিন্তু বায়োমেট্রিক সিম জালিয়াতি হলে গ্রাহক কতটা বিপদে পড়বেন? সে বিপদ কি তিনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন? এসব প্রশ্ন এখন বড় করে দেখা দিয়েছে।
তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বলছেন একজনের নিবন্ধিত সিম যদি অন্যজন তুলে নেয়, সেক্ষেত্রে দু’টো বিপদ হতে পারে। প্রথমত, সে সিমের সাথে যদি মোবাইল ফোনে টাকা লেনদেনের জন্য রেজিস্ট্রেশন থাকে তাহলে প্রতারক চক্র সে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, জালিয়াতি করা সিমের মাধ্যমে যদি কোন সন্ত্রাসী তৎপরতা, রাষ্ট্রবিরোধী কাজ অথবা কোন অন্যকোন অপরাধমূলক কাজ হয় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমেই সিমের আসল মালিককে গ্রেফতার করবে।
এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত মালিক বড় ধরনের ঝামেলায় পড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন জাকারিয়া স্বপন।
তিনি বলেন, “ আমি সরাসরি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিটার সমালোচনা করতে চাচ্ছি না। বিকজ (কারণ) এটা তারা একটা ভেরিফিকেশনের জন্য রেখেছে।”চট্টগ্রামে নিবন্ধিত সিম জালিয়াতির ঘটনা উল্লেখ করে মি: স্বপন বলেন এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন কোথাও কোথাও ভালো মতো হয়নি।
তাহলে সাধারণ মানুষ এখন কি করতে পারে?
মি: স্বপন মনে করেন যদি কারো মোবাইল সংযোগ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সাথে সাথে জেনে নিতে হবে সিমটি আয়ত্তের মধ্যে আছে কিনা।
নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তির আঙুলের ছাপ মোবাইল কোম্পানিগুলোর কাছে সংরক্ষন করার কথা নয়। কোন কোম্পানি যদি সেটি করে তাহলে তাদের জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে।
কেউ মোবাইল সিম তুলতে গেলে তার আঙুলের ছাপ জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্যভাণ্ডারের সাথে মিলিয়ে দেখার কথা। কিন্তু চট্টগ্রামে জালিয়াতির ঘটনায় এ বিষয়টি কাজ করেনি বলে পুলিশ বলছে।
মি: স্বপন বলেন, “ যেহেতু ১৫৭ টি সিম কার্ড তুলে নিয়েছে, তার মানে বুঝতে হবে যে কোন একটা জায়গায় ভেরিফিকেশনটা হচ্ছেনা। এবং ভেরিফিকেশন ছাড়াই সিম কার্ড দিয়ে দিয়েছে।”
পুলিশ বলেছে, অপরাধীরা নিজেদের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে অন্যজনের সিম তুলে নিয়েছে। এই ঘটনা শুধু একটি মোবাইল কোম্পানির ক্ষেত্রে ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করা সিম জালিয়াতির ঘটনায় মোবাইল অপারেটররা বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
সুত্রঃ বিবিসি