আইন প্রনয়ন করে রাষ্ট্র ও জনগনের নিরাপত্তা, ন্যায় বিচার, সহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেন সাংসদেরা। সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। কিন্তু যদি তারা অন্যায় কাজে ব্যবহৃত হন তবে আইন প্রনেতাদের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। এরমধ্যে যারা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাদের তীব্র সমালোচনাও হয়েছে।
সাতক্ষীরার একজন নারী সাংসদের ছেলে তার মায়ের গাড়ি, অস্ত্র ও তিন জন নারী সহ একটি রিসোর্টে পুলিশের হাতে আটক হন। পুলিশ আসামী ও আলামত থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তি সময় তিন নারীকে স্ব স্ব পরিবারের কাছে হাস্তান্তর করা হয়। অস্ত্র ও গাড়ি, মা সাংসদকে ফেরত দেয়া হয়। সাংসদ পুত্রকে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অপরাধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে সাংসদের বক্তব্য হল , তিনি ভুলে গাড়ি থেকে অস্ত্র নামাননি। আর তার ছেলে ওই গাড়িটি নিয়ে যায়। ছেলের সাথে থাকা তিন নারীর বিষয়ে সাংসদ বলেছেন, ওই তিন নারী ছোট কাল থেকে তার বাড়িতেই থাকেন। রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটির কারণে ওই ঘটনা বলে দাবি সাংসদের।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বলছেন, রিসোর্টে অসামাজিক কাজ করার সময় সাংসদের গাড়ি, অস্ত্র ও ছেলে সহ ৪জনকে আটক করা হয়েছে। সাংসদ পুত্রের সঙ্গে অসামাজিক কর্মে লিপ্ত থাকা তিন নারীও আটক হয়। তবে এএসপি বলেছেন, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দু:খ কষ্ট দুটোই হয়. যখন একজন আইন প্রনেতা একজন অপরাধীকে রক্ষার জন্য মিথ্যা কথা বলেন। ছেলে কাম অপরাধীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেকে ডুবিয়ে দিলেন এই কথা মনে নেই সাংসদের। এ ছাড়া তার গাড়ি ও অস্ত্র অন্য লোক কিভাবে ব্যবহার করলেন এই প্রশ্নের উত্তর কোন দিন পাওয়া যাবে না। আইন বলছে, এই ধরণের অপরাধ সংঘটিত হলে অস্ত্র ও গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধেও মামলা হবে। তবে এই অপরাধটি কতটুকু গুরুতর তা বুঝা যেত যদি আসামী সাংসদ পুত্র না হয়ে সাধারণ মানুষ হতেন।
খোঁজ নিলে দেখা যায়, দেশে অসংখ্য ঘটনা আছে যে, দেখা যাবে বৃদ্ধ সাংসদ। তার ছেলে বা মেয়ে বা স্ত্রী নিয়মিত সাংসদের গাড়ি ব্যবহার করছেন। অনেক সময় সাংসদের স্বাক্ষরও দিচ্ছেন এমন আলামতও আছে। সাংসদ একজনকে মনোনয়নের সুপারিশ করেন ছেলে সন্তান করছেন অন্যজনকে তাও বাবার স্বাক্ষর দিয়ে। দেশের অস্যখ থানা ও প্রশাসন আছে যা পরিচালনা করছেন সাংসদের স্ত্রী সন্তানেরা।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, আইন ও সংবিধান লংঘনের অভিযোগ উঠে স্বয়ং আইন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। আবার আইনে দন্ডিত হন একাধিক মন্ত্রী। কান ধরে উঠ বস করিয়ে জাতিকে কান ধরিয়ে রাস্তায় নামাচ্ছেন সাংসদ। টেলিভিশন টকশোতে এসে স্টুডিওতে বসেই প্রতিক্ষকে আক্রমন করছেন সাংসদ। এক দুই নয় আইনী হেফাজতে থেকে ৭জন নাগরিক হত্যা মামলার মূল আসামী আত্মরক্ষার জন্য আশ্রয় নেন সাংসদের কাছেই। সাংসদের গাড়িতে বসে সাংসদ জনগনকে মারার জন্য গুলি ছোঁড়েন বৃষ্টির মত এমন নজিরও আছে। আবার জোড়া খুনের ঘটনায় সাংংসদের গাড়িও জব্দ হয়। সাংসদের গাড়ি থেকে সাংসদ পুত্রের গুলিতে খুনও হয়েছে।
বাংলাদেশ একটি সংসদীয় গনতন্ত্রের দেশ হিসেবে এখনো সাংবিধানিকভাবে দাঁড়িয়ে আছে। এই পর্যন্ত গনতন্ত্রের অনেক অপশন হ্যাঙ্গ হয়ে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে গনতন্ত্রও কতক্ষন আমাদের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে কে জানে!
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম