গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিক্ষার্থীকে মারধর ও ‘ধর্ম নিয়ে কটূক্তির’ অভিযোগে ১৩ মে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ওই শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। পরে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। তবে সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর ওই শিক্ষককে আবারও পদে বহাল করা হয়।
আজকের সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের এ ঘটনাসহ নিকট অতীতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের নানা ঘটনা উল্লেখ করে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘুদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও তাদের প্রতি অবহেলামূলক আচরণ করছে।’
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘সম-অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে এ দেশের সংখ্যালঘুরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের ওপর যে নিপীড়ন চলছে, যেভাবে তাঁদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, আমরা এর প্রতিকার চাই।’
সমাবেশ শেষে সাত দফা দাবি আদায় ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি মিছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় মিছিলকারীরা সাংসদ সেলিম ওসমানের বিচার দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ মিছিলকারীদের আটকে দিলে একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে একই দিনে, একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক মহাসমাবেশ থেকে সাত দফা দাবির ঘোষণা দেয় ঐক্য পরিষদ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় সংসদসহ সাংবিধানিক পদগুলোতে ২০ শতাংশ আসন ও পদায়ন নিশ্চিত করা, সাংবিধানিক বৈষম্য বিলোপ, সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন, সম-অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ইত্যাদি।