নরসিংদী; চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় চরআড়ালিয়া ইউপির দুটি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। আরো দুটি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৯৯ দশমিক ৯০ ভাগ ও ৯৭ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট। বিষয়টি অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন। এই চার কেন্দ্রের বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, হিসাব অনুযায়ী এই চারটি কেন্দ্রে মৃত ও প্রবাসী ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন। যা আদৌ সম্ভব নয়। তাছাড়া, ইউপি নির্বাচনের অতীতের রেকর্ড অনুযায়ী ৮০ ভাগের ওপরে ভোট পড়াটাই স্বাভাবিক। আর শতভাগ ভোট কোনোভাবেই পড়তে পারে না। কারণ সেখানে মৃত ও প্রবাসী ভোটার রয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে কর্মকর্তারাও এলাকার বাইরে থাকায় ভোটদানে বিরত থাকেন। এ ছাড়াও স্কুল-কলেজের চাকরিজীবী থাকলে তাদেরকে নির্বাচনী দায়িত্বেও থাকতে হয়েছে। তারাও ভোট দিতে পারেননি। ফলে কোনোভাবে শতভাগ ভোট পড়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চরআড়ালিয়া ইউপির ৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ১০ হাজার ১শ’। এর মধ্যে বৈধ ভোট পড়েছে ৮ হাজার ৫৩২টি। বৈধ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নুরুজ্জামান সরকার পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৮টি ভোট। বিএনপির প্রার্থী মো. হাসানুজ্জামান পেয়েছেন ৩ হাজার ২৮৫টি ভোট। এ ছাড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহানশাহ পান ১৯৯টি ভোট। ভোট বাতিল হয়েছে ১১০টি। ওই ইউনিয়নের শতকরা ভোটের প্রদত্ত হার ৮৬ শতাংশ। অথচ ওই ইউপির বাতাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। বটতলি খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৯ দশমিক ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে। খামারপাড়া মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৯৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। ওই চারটি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৩৭টি ভোটের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৬৮টি ভোট। চারটি কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থী ভোট পেয়েছে মাত্র ৭টি আর স্বতন্ত্র প্রার্থী পান ৫টি ভোট। ৩৯টি ভোট বাতিল করা হয়। বটতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খামারপাড়া মাদরাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ছাড়া অন্যরা ভোট পাননি। এর প্রতিকার চেয়ে ওই ইউপির পরাজিত এক প্রার্থী প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ মানবজমিনকে বলেন, শতভাগ ভোট পড়ার কোনো সুযোগ নেই। কোথাও ভুল হতে পারে। বিষয়টি অবশ্যই আমরা তদন্ত করে দেখবো। তারপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।