যুদ্ধাপরাধের বিচারে দলের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হওয়ায় জামাতে ইসলামী চরম নেতৃত্ব শূন্যতায় পড়েছে, এবং সহসা এই শূন্যতা কাটানো কঠিন হবে।
বিবিসিকে একথা বলেছেন ঢাকার সিনিয়র সাংবাদিক এবং জামায়াতের রাজনীতির নিবিড় একজন পর্যবেক্ষক সালাহউদ্দিন বাবর।
“এটা সত্যি জামায়াত একটি ক্যাডার-ভিত্তিক দল, কিন্তু দলে নেতৃত্ব শূন্যতা দেখা দিয়েছে, নিঃসন্দেহে জামায়াতের নেতৃত্ব এখন বিপর্যস্ত অবস্থায়।”
কিন্তু এই নেতৃত্ব শূন্যতা কাটানো কতটা সহজ হবে? এই প্রশ্নে দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক বলেন, সহসা নতুন নেতৃত্ব তৈরি হওয়া কঠিন ব্যাপার। “রাজনীতিতে জামায়াত বিরোধিতা এখনও চরম মাত্রায়, ফলে ঐ পথে হাঁটা কষ্টকর হবে জামায়াতের জন্য।”
কিছুদিন আগ পর্যন্ত নেতাদের ফাঁসির রায় এবং কার্যকর করার প্রতিবাদে তৃণমূল স্তরে জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে সহিংস তৎপরতা চোখে পড়তো। অথচ মঙ্গলবার দলের শীর্ষ নেতা এবং আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি নিয়ে তেমন কোন বিক্ষোভ চোখে পড়েনি।
কেন তেমন প্রতিক্রিয়া নেই — এই প্রশ্নে সালাউদ্দিন বাবর, যিনি একসময় জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামে কাজ করেছেন, বলেন নেতৃত্ব শূন্যতা এবং অব্যাহত ধর-পাকড়ে নেতা-কর্মীদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়েছে।
১৯৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সবসময়ই জামায়াতের ঘাড়ে ছিল। যে সব জামায়াত নেতার বিচার হয়েছে এবং হচ্ছে, ১৯৭১ সাল থেকেই তারা সবাই অপরাধী হিসাবে সন্দেহের পাত্র ছিলেন।
এসব নেতাদের প্রস্থানের পর জামায়াত কি তাদের ঐতিহাসিক ভুল স্বীকার করে নতুন করে রাজনীতির পথ নিতে পারে?
সালাহউদ্দিন বাবর সে সম্ভাবনা নাকচ করছেন না।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগে দলের ভেতর থেকে কিছু লোক “ভিন্ন রাজনীতি, অন্যভাবে এগুনোর” কথা ওঠাতে শুরু করেছিলেন।
তবে মি বাবর, এ ধরণের ভিন্ন সুরে যারা কথা বলতেন, দলে তাদের তেমন শক্তি ছিলনা।
“তারা ছায়া ছিলেন, এখনও ছায়াই আছেন।”
“নতুন নেতৃত্বে নতুন ধ্যান-ধারণা নিয়ে নতুন রাজনীতি শুরুর কথা এখন হয়ত আবার উঠে আসবে, তবে সময় লাগবে।”
সালাহউদ্দিন বাবার বলেন, ঐ লক্ষ্যে এখনও তেমন কোনো পদক্ষেপ জামায়াতের ভেতর নেই।