মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যাওয়া নিয়ে পাকিস্তানের উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষাপটে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
পাকিস্তানের উদ্বেগ নিয়ে রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র দফতরে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া আমাদের হতাশ করেছে। আমরা কখনোই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও উদ্বেগকে স্বাগত জানাই না। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও তারা এটি করছে। তারা বলছে যে ব্যথিত হয়েছেন। কিন্তু আমরা যাদের বিচার করছি, তারা বাংলাদেশের নাগরিক।’
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা দেওয়া বন্ধ করতেও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা বলা হচ্ছে। সেখানে উল্লেখ ছিল পাকিস্তানের যে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, তাদের বিচার করা হবে না। ওই চুক্তিতে কিন্তু বলা হয়নি যেসব যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের বিচার করা যাবে না।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীরা পাকিস্তানের হয়ে কাজ করেছেন। তাই তাদের জন্য সেই জায়গা থেকে পাকিস্তান ব্যথিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এটিকে বিপজ্জনক মনে করি, কারণ মানবতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধীরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আশ্বস্ত করার একটি জায়গা খুঁজছেন। পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে তাদের পাশে থাকবে, এ রকম একটি বার্তা বোধ হয় দিতে চাইছে। তা না হলে নিজামীর বিচারে পাকিস্তান কেন ব্যথিত হবে?’
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গত ৫ মে খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এতে তার ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকে।
এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করছি।