ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে আজ সকালে রাজপথ থেকে আটক করে দিল্লি পুলিশ। কিছু সময় পরেই অবশ্য ছেড়ে দেয়া হয় তাদের। তাদের থানায় আটক থাকার সময় কংগ্রেস সমর্থকরা থানার সামনে বিক্ষোভ করে। গণতন্ত্র বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে আয়োজন করা এক র্যালি পুলিশের বাধা ভেঙে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ আটক করে কংগ্রেসের এসব শীর্ষ নেতাদের। বার্তা সংস্থা পিটিআই ও দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়, গতকাল সকালে ‘সেভ ডেমোক্রেসি’ বা গণতন্ত্র বাঁচাও শীর্ষক এক র্যালির ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। র্যালি শুরুর আগে দিল্লির যন্তর মন্তরে কংগ্রেসের নেতারা বর্তমান ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির কঠোর সমালোচনা করেন। মোদির প্রতিশ্রুত ‘আচ্ছে দিন’ বা সুসময় কোথায়, তা জানতে চান কংগ্রেস নেতারা। মোদির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ওপর হামলার অভিযোগও করেন তারা। এসময় সোনিয়া বলেন, ‘কংগ্রেস পার্টি দুর্বল এমনটি ভাবার মতো ভুল করবেন না।
আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল বা ধ্বংস হতে দিতে পারি না।’ পরে র্যালি যাত্রা শুরু করে সংসদ অভিমুখে। পথে পুলিশ র্যালি এগিয়ে যেতে বাধা প্রদান করে। সেই বাধা অতিক্রম করে র্যালি নিয়ে কংগ্রেস নেতারা এগিয়ে যেতে চাইলে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও মনমোহন সিংকে আটক করে পুলিশ। তাদের সংসদ সড়ক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটকের অল্প কিছু সময় পরেই ছেড়েও দেয়া হয় তাদের। কয়েক দিন আগেই মোদি সরকারের পক্ষ থেকে অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড চপার চুক্তির সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীর দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করা হয়েছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোনিয়া। বরং সরকারই গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সরকার এমন অভিযোগের মাধ্যমে সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলেই জানান তিনি। এসব অভিযোগকে নির্দেশ করে সোনিয়া বলেন, ‘আমাদের ভয় দেখানোর বা মানহানি করার চেষ্টা করবেন না।
জীবন আমাকে লড়তে শিখিয়েছে।’ মোদি সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করছে অভিযোগ করে সোনিয়া বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে যেকোনো প্রচেষ্টা আমরা সফল হতে দিব না। কংগ্রেসের জন্য সংগ্রাম নতুন কিছু নয়। জাতির জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি। আমরা সেই মানুষ যারা মৌলিক নীতির সুরক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছি, প্রাণ দিয়েছি। সেখান থেকে আমরা সরে আসব না।’ উত্তরখা- বা অরুণাচল প্রদেশের বর্তমান অবস্থা এটাই প্রমাণ করে যে আদলে কোনো সরকার ক্ষমতায় নেই, এমন অভিযোগও করেন সোনিয়া। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-ও বলেন, ‘উত্তরখা- ও অরুণাচল প্রদেশে কংগ্রেস সরকারকে অস্থিতিশীল করার মাধ্যমে মোদি গণতন্ত্রকেই আক্রমণ করেছেন।’ গণতন্ত্রের সুরক্ষায় কংগ্রেস সবসময়ই আত্মত্যাগ করেছে এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষায় তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান মনমোহন।