গত তিন দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত ও বিকৃত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। নাগরিক সংগঠনটির কর্মকর্তারা বলেছেন, এবারের নির্বাচন অস্ত্রের ঝনঝনানিতে পরিণত হয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে । তিন দফা নির্বাচনের প্রাণহানির চিত্র তুলে ধরে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রত্যেকটা প্রাণের গুরুত্ব আছে। আবারও প্রাণহানি না হওয়াটাও নির্বাচন সুষ্ঠুতার একক মানদণ্ড নয়। কারণ অস্ত্র দেখলেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা আগেই সরে যায়।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে সুজন আয়োজিত ‘চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চালচিত্র’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসময় তারা নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেন। সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্য মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্যে গত তিন দফায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চালচিত্র তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানি, মনোনয়ন বাণিজ্যের ব্যাপকতা, রেকর্ড সংখ্যক ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া, একটি বড় রাজনৈতিক দল কর্তৃক অনেক ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে না পারা, এক দলকেন্দ্রিক ফলাফল, সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের হামলা-নির্যাতন ইত্যাদির কারণে এই নির্বাচন জনগণের দৃষ্টি কেড়েছে। ফলে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দিলীপ কুমার বলেন, অতীতের নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচন ছিল ১৯৮৮ সালের নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটে। আর এবার এই তিনধাপে নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৭১ জনের। আহত হয়েছে ৬ সহস্রাধিকের। প্রাণহানির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পূর্বে ১০ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের দিন ১১ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর থেকে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১১ জন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৯ জন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১৭ জন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৫ জন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া সম্পর্কে বলেন, চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যেই সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ১৯৮৮ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১০০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর এবারে প্রথম ধাপ থেকে শুরু করে চতুর্থ ধাপের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর এই সংখ্যা ১৫০-এ দাঁড়িয়েছে। প্রথম ধাপে ৫৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৩৪ জন, তৃতীয় ধাপে ২৯ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৩৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী। অপরদিকে চার ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৩৮৮ চেয়ারম্যান পদে বিএনপি প্রার্থী দিতে পারেনি। প্রথম ধাপে ১১৯, দ্বিতীয় ধাপে ৭৯ এবং তৃতীয় ধাপে ৮১টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীশূন্য ছিল। চতুর্থ ধাপেও ১০৯টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নেই। অনেক স্থানে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা প্রদান, মনোনয়নপত্র কেড়ে নেয়া বা ছিঁড়ে ফেলার কারণে বিএনপি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। কেউ কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ সৃষ্টির কারণে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বলেন, ইউপি নির্বাচনে অস্বাভাবিক হারে ভোট পড়ারও অভিযোগ উঠেছে কোথাও কোথাও। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৬টি ইউনিয়নে এবং তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। দিলীপ কুমার সরকার বলেন, অধিকাংশ এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিএনপিতেও এমন অভিযোগ রয়েছে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে এ পর্যন্ত ১৪ জন নারী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও এ চিত্র তার উল্টো বলে মন্তব্য করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, প্রতিটি ধাপের নির্বাচনের পূর্বেই প্রতিপক্ষের এজেন্টদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া বা ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, বুথ দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরা, চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালটে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করা, নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যালট পেপারে সিল মারা বা সিল মারতে সহায়তা করা, ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা এবং সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোনো কোনো ইউনিয়নে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের সবগুলোই আওয়ামী লীগ অথবা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। দিলীপ কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, খারাপ নির্বাচনের একটি ট্রেন্ড বা নজির সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। মনোনয়ন বাণিজ্য রোধে দলীয় প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা বিকৃত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন লক্ষ্য করছি। নির্বাচনে সহিংসতা ও অনিয়মের পাশাপাশি বর্তমানে প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য অশনি সঙ্কেত। তিনি বলেন, শুধু নির্বাচনের দিনকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বললে হবে না। বরং নির্বাচনের আগে-পরে কী ঘটছে, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে কিনা এবং সবাই প্রার্থী হতে পারছে কিনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, দলভিত্তিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে সহিংসতা ও অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। তাই ভবিষ্যতে দলভিত্তিক নির্বাচন করা ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে গণমাধ্যমে জোরালো আওয়াজ তোলা দরকার। কারণ আমাদের দলগুলো এখনও দলভিত্তিক নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। তিনি বলেন, শুধু আইন ও ক্ষমতা থাকলেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ কারা কমিশনে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এবং নিয়োগপ্রাপ্তরা সদিচ্ছা ও সাহস নিয়ে কাজ করছেন কিনা সেটাই প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে সুজন আয়োজিত ‘চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চালচিত্র’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসময় তারা নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেন। সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্য মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্যে গত তিন দফায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চালচিত্র তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানি, মনোনয়ন বাণিজ্যের ব্যাপকতা, রেকর্ড সংখ্যক ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া, একটি বড় রাজনৈতিক দল কর্তৃক অনেক ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে না পারা, এক দলকেন্দ্রিক ফলাফল, সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের হামলা-নির্যাতন ইত্যাদির কারণে এই নির্বাচন জনগণের দৃষ্টি কেড়েছে। ফলে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দিলীপ কুমার বলেন, অতীতের নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচন ছিল ১৯৮৮ সালের নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটে। আর এবার এই তিনধাপে নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৭১ জনের। আহত হয়েছে ৬ সহস্রাধিকের। প্রাণহানির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পূর্বে ১০ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের দিন ১১ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর থেকে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১১ জন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৯ জন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১৭ জন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৫ জন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া সম্পর্কে বলেন, চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যেই সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ১৯৮৮ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১০০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর এবারে প্রথম ধাপ থেকে শুরু করে চতুর্থ ধাপের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর এই সংখ্যা ১৫০-এ দাঁড়িয়েছে। প্রথম ধাপে ৫৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৩৪ জন, তৃতীয় ধাপে ২৯ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৩৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী। অপরদিকে চার ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৩৮৮ চেয়ারম্যান পদে বিএনপি প্রার্থী দিতে পারেনি। প্রথম ধাপে ১১৯, দ্বিতীয় ধাপে ৭৯ এবং তৃতীয় ধাপে ৮১টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীশূন্য ছিল। চতুর্থ ধাপেও ১০৯টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নেই। অনেক স্থানে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা প্রদান, মনোনয়নপত্র কেড়ে নেয়া বা ছিঁড়ে ফেলার কারণে বিএনপি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। কেউ কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ সৃষ্টির কারণে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বলেন, ইউপি নির্বাচনে অস্বাভাবিক হারে ভোট পড়ারও অভিযোগ উঠেছে কোথাও কোথাও। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৬টি ইউনিয়নে এবং তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। দিলীপ কুমার সরকার বলেন, অধিকাংশ এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিএনপিতেও এমন অভিযোগ রয়েছে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে এ পর্যন্ত ১৪ জন নারী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও এ চিত্র তার উল্টো বলে মন্তব্য করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, প্রতিটি ধাপের নির্বাচনের পূর্বেই প্রতিপক্ষের এজেন্টদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া বা ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, বুথ দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরা, চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালটে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করা, নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যালট পেপারে সিল মারা বা সিল মারতে সহায়তা করা, ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা এবং সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোনো কোনো ইউনিয়নে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের সবগুলোই আওয়ামী লীগ অথবা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। দিলীপ কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, খারাপ নির্বাচনের একটি ট্রেন্ড বা নজির সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। মনোনয়ন বাণিজ্য রোধে দলীয় প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা বিকৃত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন লক্ষ্য করছি। নির্বাচনে সহিংসতা ও অনিয়মের পাশাপাশি বর্তমানে প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য অশনি সঙ্কেত। তিনি বলেন, শুধু নির্বাচনের দিনকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বললে হবে না। বরং নির্বাচনের আগে-পরে কী ঘটছে, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে কিনা এবং সবাই প্রার্থী হতে পারছে কিনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, দলভিত্তিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে সহিংসতা ও অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। তাই ভবিষ্যতে দলভিত্তিক নির্বাচন করা ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে গণমাধ্যমে জোরালো আওয়াজ তোলা দরকার। কারণ আমাদের দলগুলো এখনও দলভিত্তিক নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। তিনি বলেন, শুধু আইন ও ক্ষমতা থাকলেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ কারা কমিশনে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এবং নিয়োগপ্রাপ্তরা সদিচ্ছা ও সাহস নিয়ে কাজ করছেন কিনা সেটাই প্রধান বিবেচ্য বিষয়।