সোমবার রাজধানীর এলেনবাড়ীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির সভা হয়। তিন ঘণ্টার এ সভায় এক পয়সা নিয়েই ছিল আলোচনা। বিআরটিএ কর্মকর্তারা তিন পয়সা ভাড়া কমানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
পরিবহনখাতের নিয়ন্ত্রক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সভায় বলেন, ‘তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমলে, ভাড়া এক পয়সা কমে—এটাই সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। অতীতেও এ পদ্ধতিতেই ভাড়া কমানো হয়েছিল। এতে মালিকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ নেই।’
কিন্তু পরিবহন মালিক নেতারা এর বিরোধিতা করেন। তাদের দাবি, তেলের দাম কমলেও অন্য সব যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে। তাই ৩ পয়সা ভাড়া কমালে তারা লোকসানের মুখে পড়বেন।
সভা শেষে নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘৩ পয়সা ভাড়া কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে; সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত হবে।’
তিনি জানান, মন্ত্রণালয় যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন থেকেই নতুন ভাড়া কার্যকর হবে।
সভায় সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সরকারপক্ষ থেকে ৩ পয়সা ভাড়া কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা ২ পয়সা কমানোর প্রস্তাব করেছি। পরিবহন মালিকরাও ভাড়া কমানোর পক্ষে। কিন্তু এখানে এক পয়সা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ব্যয় বিশ্লেষণে দেখিয়েছি—তিন পয়সা কমানো হলে ব্যবসায় যে ক্ষতি হবে, ২ পয়সায় তা হবে না।
খন্দকার এনায়েত উল্লাহ আরও বলেন, ‘শুধু জ্বালানি তেলের কথা বিবেচনা করলে হবে না; এর সাথে যন্ত্রাংশসহ ২২টি বিষয় জড়িত। সেগুলোর দাম কমেনি, বরং বাড়ছে।’
ডিজেলের দাম বাড়ায় সর্বশেষ ২০১৩ সালে দূরপাল্লার বাস ভাড়া বাড়ায় সরকার। বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে বাস ভাড়া ১ টাকা ৪৫ পয়সা। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দুই দফায় ডিজেলের দাম লিটারে কমেছিল ১১ টাকা। পরে ২০১১ ও ২০১৩ সালে দুই দফায় ডিজেলের দাম লিটারে বাড়ে ১৫ টাকা। কিন্তু ভাড়া বৃদ্ধি পায় কিলোমিটারে ২৫ পয়সা। তখন পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে ভাড়া ১০ পয়সা বেশি বাড়ানো হয়েছিল।
গত রোববার ডিজেলের দাম ৬৮ থেকে কমিয়ে ৬৫ টাকা পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। অকটেনের দাম ৯৯ থেকে ৮৯ টাকা ও পেট্রোলের দাম ৯৭ থেকে ৮৬ টাকা করা হয়। অকটেন ও পেট্রোল প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের জ্বালানি।
পরিবহন মালিক সমিতির হিসাব মতে, দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা পথে চলাচলকারী সোয়া এক লাখ বাস ডিজেলে চলে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিআরটিএ-এর হিসেবে, রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের সংখ্য ৬ হাজার ৪৩৫। এর অর্ধেকেরও বেশি ডিজেলচালিত। কিন্তু রাজধানীতে বাস ভাড়া কমছে না।