ঢাকা: সরকার টু সরকার (জি টু জি) চুক্তির আওতায় অপেক্ষাকৃত দক্ষ (সেমি স্কিল্ড) আনসার ও ভিডিপি সদস্য পাঠানো হবে মালেশিয়ায়। এ লক্ষে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে ব্যাংকে তাদের ডাটা এন্ট্রি করা হবে।
যদিও মালেশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ৩ বছরে ১৫ হাজার কর্মী পাঠানোর লক্ষে জি টু জি চুক্তির আওতায় এসব সদস্যকে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে আনসার ও ভিডিপি অধিদফতরের উপ মহাপরিচালক (ডিডিজি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে ব্যাংকে ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু হবে। তবে জি টু জি চুক্তির বিষয়টি কার্যকর হলেই পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে।
গত ১৯ জানুয়ারির বৈঠকে জানানো হয়, যারা কাজের জন্য বিদেশ যেতে ইচ্ছুক, অপেক্ষাকৃত এমন দক্ষ সদস্যদের ব্যাংকে ডাটা এন্ট্রি করানোর জন্য আনসার ও ভিডিপি অধিদফতরকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশের পর আনসার ও ভিডিপি বাহিনী তাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে ব্যাংকে ডাটা এন্ট্রি করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি তিন বছরে ১৫ লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানোর লক্ষে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারকের খসড়ার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এক মাসের মধ্যেই চুক্তি সই হবে। চুক্তি সইয়ের পর কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উভয় দেশের মধ্যে চুক্তিও সই হয়। জি টু জি প্রক্রিয়ায় (সরকার টু সরকার) কর্মীপ্রতি অভিবাসন ব্যয় ধরা হয় ৩৪ থেকে ৩৭ হাজার টাকা। এছাড়া বিমানভাড়া, ইন্স্যুরেন্স, স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট খরচ বহন করবে মালেশিয়া। নিয়োগকর্তাকে (মালয়েশিয়া) কর্মীর (যোগ্যতাভিত্তিক) চাহিদাও জানানোর কথা বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
এদিকে, চুক্তির পরও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়টি সরকারি পর্যায়ে অপেক্ষমান রয়েছে। কারণ সব খাতে ১৫ লাখ (১.৫ মিলিয়ন) কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিলেও তা অপাতত স্থগিত করে মালেশিয়া। গত ১২ মার্চ দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ড. আহমদ জাহিদ হামিদি স্থগিতের বিষয়টি প্রকাশ করেন। তবে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা শিগগিরই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ড. আহমদ জাহিদ হামিদি। আর ঘোষণা আসলেই প্রতিবছর ৫ হাজার করে ১৫ হাজারা কর্মী পাঠাবে বাংলাদেশ।
যে প্রক্রিয়ায় কর্মী পঠানো হবে
সরকার বিএমইটির তালিকা অনুযায়ী কর্মী বাছাই করবে। এই বাছাই করা তালিকা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) দেবে বায়রাকে। বায়রা এই ডাটাবেজ থেকে বায়োট্রিক পদ্ধতিতে ভিসা প্রসেসিং, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বহিঃগমন সেবা দেবে।
ভিসা প্রসেসিংসহ কর্মীর ডাটাবেজ এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হবে অনলাইনে। কর্মীদের বেতন পরিশোধ করা হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। মালেশিয়ায় কর্মী পাঠানোর এই কার্যক্রম তদারকি করবে মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ। যতি কোনো কারণে এই গ্রুপ তাতে ব্যর্থ হয় তাহলে উভয় দেশের উর্ধ্বতন পর্যযায়ে তা মনিটরিং করা হবে।
আগে বাংলাদেশের কর্মীরা শুধু প্লান্টেশন সেবা কাজে সুযোগ পেতো। চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর প্লান্টেশনসহ উৎপাদন, কনস্ট্রাকশন ও সেবা খাতসহ বিভিন্ন খাতে কাজের সুযোগ পাবে। যেতে পারবে নারী কর্মীরাও।