বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রপন্থিদের হামলার শিকার হয়েছেন এমন মানুষের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, শিক্ষাবিদ, এলজিবিটি কর্মী, শিয়া, সুফি আহমাদিয়া মুসলিম, খ্রিস্টান ও হিন্দু সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। টাঙ্গাইলে নিখিল জোয়ারদার নামে একজন দর্জিকে গতকাল কুপিয়ে হত্যার পর এসব কথা লিখেছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরকে হত্যা করা হয়েছে। তার পরিবার বলছে, তিনি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করতেন। তাকে হত্যার ঘটনায় এটা পরিষ্কার যে, যারা এমন হত্যার ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় আছেন তার ক্রমশ বিস্তার ঘটেছে। এসব হামলার নেপথ্যে কে বা কারা তা রয়েছে অস্পষ্ট। বাংলাদেশে রয়েছে অনেক উগ্রপন্থি গ্রুপ।
এসব হামলায় খুব কমই শাস্তি দেয়া হয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আল কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলো। কিন্তু দায় স্বীকার নিয়ে আপত্তি আছে বাংলাদেশের। এর পরিবর্তে দেশটি এসব হত্যার জন্য বিরোধী দল ও স্থানীয় ইসলামি গ্রুপগুলোকে দায়ী করেছে। কিন্তু হত্যাকা- বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে অভিযোগ মোকাবিলা করতে হবে যে, তারা সংখ্যালঘুদের রক্ষায় যথেষ্ট করছে না।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, টাঙ্গাইলে হিন্দু একজন দর্জি নিখিল জোয়ারদারকে গতকাল তার দোকানের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রপন্থিরা যেসব হামলা চালাচ্ছে তিনি তার সর্বশেষ শিকার।
পুলিশ বলছে, তিনি ইসলাম সম্পর্কে এর আগে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে ২০১২ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। গতকাল বিকেলে তাকে হত্যার পর ইসলামিক স্টেট এর দায় স্বীকার করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব হত্যাকা- হয়েছে তার দায় স্বীকার করেছে কতগুলো ইসলামী উগ্রপন্থি গ্রুপ। এর আগে দেশের একমাত্র এলজিবিটি বিষয়ক ম্যাগাজিনের একজন সম্পাদক জুলহাজ মান্নানকে ও তার এক বন্ধুকে তার ঢাকার বাসায় হত্যা করা হয়েছে। আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন বাংলাদেশী উগ্রপন্থি গ্রুপ আনসার আল ইসলাম এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে। চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গত বছর হত্যা করা হয়েছে চারজন ব্লগারকে। ‘নাস্তিক ব্লগারের’ ৮৪ জনের হিটলিস্টে তাদের নাম ছিল। এ তালিকা ২০১৩ সালে ইসলামি গ্রুপগুলো প্রচার করেছিল।