আমাদের সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগন; এবং জনগনের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।
অনুচ্ছেদ ৭(২) বলা আছে, জনগনের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যাক্তিরুপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ন হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ন, ততখানি বাতিল হইবে।
সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।
আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছে-৪৪(২) বলছে, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।
উপরে উল্লিখিত অনুচ্ছেদ সমূহ বাংলাদেশের সংবিধান থেকে উল্লিখিত হইল।
২৫ এপ্রিল বাংলাদেশের মন্ত্রী পরিষদ বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের অসদাচারণ বা অসামর্থ্য (তদন্ত ও প্রমাণ) আইন, ২০১৬ এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। একই সঙ্গে একই বিষয়ের উপর বিচারাধীন একটি রীট মামলার রায়ের তারিখ রয়েছে আগামী ৫ মে। এ্রই রায়কে সামনে রেখে আইনটিতে উচ্চ আদালত কোন মতামত না দিয়ে ফেরতও দিয়েছেন। সুতরাং রায়ের আগে মন্ত্রী পরিষদের এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
এই অবস্থায় আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সভায় বলেছেন, দেশের বহু মানুষ বিচার পান না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিচার না পাওয়াদের মধ্যে তিনিও একজন ভুক্তভোগী বলে জানিয়েছেন তিনি। আজ সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, উচ্চ আদালতের মতামত ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যে একটি ঠান্ডা লড়াই চলছে। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি বিচার পেতে ভুক্তভোগী হন তাহলে সাধারণ মানুষের কি দশা হবে তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা থাকাই স্বাভাবিক।
এই অবস্থায় সংবিধানের দুটি মৌলিক অংশ আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে দ্রুত সমন্বয় হওয়া উচিত।
জাতির প্রত্যাশা, সাংবিধানিক ভাবে এই বিষয়টি নিস্পত্তি না হলে আমাদের ভাগ্যে দুর্যোগের ঘনঘটা নেমে আসার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম