ফেইসবুকে প্রেম: অতঃপর দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খুন

Slider বাংলার মুখোমুখি

031546Pic-22

রাজশাহীতে আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েটিকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া নাসরিনকে ধর্ষণের পর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত অপর শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র মিজানুর রহমান সুমাইয়াকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করছেন পুলিশসহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে দুই শিক্ষার্থীর লাশ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সুমাইয়ার লাশ বুঝে নেন তাঁর বাবা ও বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল করিম, বোন তাসনিম খাতুন এবং মিজানের লাশ বুঝে নেন তাঁর মামা সরওয়ার হোসেন বাবু ও নানা বেলাল হোসেন।

রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহাদত হোসেন খান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে সুমাইয়ার সঙ্গে মিজানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সূত্র ধরে সুমাইয়াকে কৌশলে রাজশাহীতে ডেকে এনে হোটেলে ওঠেন কথিত প্রেমিক মিজান। এরপর তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। প্রেমিকাকে ধর্ষণের পর মিজান আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওসি বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে ঘটনার মোটিভ উদ্ধার হবে।

অন্যদিকে ময়নাতদন্তকারী রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক এনামুল হক বলেন, ‘ধর্ষণের পর মেয়েটিকে কাঠের শক্ত লাঠি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আর ছেলেটি আত্মহত্যা করতেই পারে। কারণ তার দুই হাতের বাধার মাঝখানে অনেকটা ফাঁকা ছিল। তাকে হত্যাও করা হতে পারে। বিষয়টি জটিল। ঘটনাটি খুবই জটিল।’

মর্গে লাশ নিতে এসে সুমাইয়ার বোন তাসনিম খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা কখনো জানতে পারিনি বোন কারো সঙ্গে প্রেম করত।’ তিনি বলেন, তাঁরা তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সুমাইয়া ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বাবা গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের সহকারী পরিদর্শক।

মিজানের মামা সরওয়ার হোসেন জানান, গত বুধবার ফোন করে মিজান তাঁর বাবার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তাঁর এক বন্ধুর কাছে ফোন করেছিলেন তিনি। কিন্তু এর পর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মিজান কাউকে হত্যা করে আত্মহত্যা করতে পারে বলে বিশ্বাস হয় না। কারণ সে ওই ধরনের ছেলে না।’ তিনি জানান, মিজানের বাবা উমেদ আলী সাধারণ কৃষক। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার এলাকায় অবস্থিত নাইস ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে সুমাইয়া ও মিজানের লাশ গত শুক্রবার বিকেলে উদ্ধার করে পুলিশ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *