ইকুয়েডরে বাড়ছে লাশের মিছিল। গত শনিবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত দেশটির নিহতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ছয়শ। নিহত রয়েছেন এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে একশ ৩০ জন। ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ১২ হাজারেরও বেশি বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকবারই আফটারশকে কেঁপে উঠেছে ইকুয়েডর। বৃহস্পতিবার আরও একটি ভূমিকম্প আঘাত করেছে দেশটিতে।
তবে নতুন করে কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬। ইকুয়েডরের উপকূলের ১০০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর উৎপত্তিস্থল। ইকুয়েডরের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, এরপর বৃহস্পতিবার রাত ও শনিবারে প্রায় ৭০টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে। তাদের হিসাবে, শনিবারের ভূমিকম্পের পর থেকে এখন পর্যন্ত আফটারশকের পরিমাণ প্রায় সাতশ। দেশটির জরুরি ব্যাবস্থাপনা কর্মকর্তা রিকার্ডো পিনাহেরেরা শুক্রবার সতর্ক করেছেন, আরও কয়েক সপ্তাহ ভূমিকম্প ও আফটারশকের আশঙ্কা রয়েছে।
তবে ঠা-া মাথায় থাকার জন্য ইকুয়েডরবাসীদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, পানি ও জরুরি ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। ইকুয়েডর সরকার ছাড়াও বিদেশি গোষ্ঠী ও সংস্থাগুলোও ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরিয়া স্বীকার করে নিয়েছেন, রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশার কারণে অনেক এলাকাতেই ত্রাণ পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। ইকুয়েডরের স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ এই ভূকম্পে ধ্বংস হয়েছে প্রায় সাত হাজার ভবন। ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ এখন দিনযাপন করছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে কাজ করে যাচ্ছেন প্রায় ১৪ হাজার নিরাপত্তা কর্মী।
রাফায়েল কোরিয়া জানিয়েছেন, এই ভূমিকম্পের ক্ষতির পরিমাণ দুইশ থেকে তিনশ কোটি মার্কিন ডলার। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশটিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে বাদ দিয়ে বাকি এলাকায় সাময়িকভাবে কর বাড়ানো হয়েছে। তা থেকে সাড়ে ৬৫ কোটি থেকে একশ কোটি ডলার আসবে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চারশ ৮৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার পরীক্ষাধীন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও বিক্রি করে দেয়া হতে পারে।