রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী এলাকায় চলছে শোকের মাতম। প্রায় ঘণ্টা তিনেক যান চলাচল বন্ধ থাকার পর বিকেলে স্বাভাবিক হয়েছে মহাসড়কে। হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। চলছে চিকিৎসা।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জের ইকরচালী বরাতির ব্রিজ এলাকায় সায়মন ও তৃপ্তি পরিবহনের দুটি যাত্রীবাহি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৮জন আর হাসপাতালে নেয়ার পরে অপর ৪ জনের মৃত্যু হয়। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৬৬ জন বাসযাত্রী। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে হতাহতদের বের করা হচ্ছে
নিহতদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ আর দুইজন মাত্র নারী রয়েছে। বিকেল পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ৯ জনের নাম পরিচয় জানা গেছে। বাকিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
দুর্ঘটনার পরেই এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে পরবর্তিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখন পুরো এলাকা জুড়ে চলছে শোকের মাতম। অনেকেই স্বজনদের খোজে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়া নিহতরা হলেন- নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ইউনুস আলীর ছেলে মুহাম্মদ আলী (৪৫), একই এলাকার সাবেদ মিয়ার ছেলে আব্দুল মতিন (৩২), ইকরচালী ফারুকিয়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা জিন্নাত আরা (৩৫), সায়মন পরিবহনের চালক সৈয়দ আলী (৪৮), দিনাজপুরের চিরিরবন্দর এলাকার অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে চন্দন রায় (৩০), তৃপ্তি পরিবহনের চালক তৈয়ব আলী (৪৫), রংপুরের গঙ্গাচড়া চেংমারি এলাকার আবু বকরের ছেলে অকুল মিয়া (৩০), নীলফামারীর কুঠিমারি কাচারীপাড়া এলাকার বছির উদ্দিনের ছেলে আতোয়ার হোসেন (৪৩), একই এলাকার ছকমল আলীর ছেলে লিটন মিয়া (২২)। অন্য তিনজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নিহতদের মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সায়মন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ইকরচালীর বরাতি ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে সামনের ডানদিকের চাকা পাংচার (লিক) হয়। এসময় চালক চলন্ত গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিকে দিনাজপুর থেকে আসা রংপুরগামী তৃপ্তি পরিবহনের মুখোমুখি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৮ জন এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৬৬জন বাসযাত্রী। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।