ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বিরোধের জের ধরে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ আহত হন পাঁচজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছুঁড়ে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধঘণ্টা ধরে বন্ধ থাকে দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, শুক্রবার দক্ষিণ জেলার আওতাধীন বাঁশখালি থানার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলের প্রার্থী মনোনয়নের মতবিনিময় এবং আনোয়ার ও কর্ণফুলি থানার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণার কথা ছিল। পরে হামলার আশঙ্কায় তা স্থগিত করা হয়। কিন্তু এতেও রক্ষা হয়নি। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। সেখানে আগে থেকে মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্যরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে বিক্ষুব্ধরা। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা অকল্পনীয়। এ ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত হয়ে গেছি। বিষয়টি হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক বলেন, ‘তৃনমূলের মতামত নিয়ে আমরা আনোয়ারা ও কর্ণফুলি থানার প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। কিন্তু তৃনমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন প্রার্থীদের সাক্ষাতকারের তারিখ ঘোষণা করায় নেতাকর্মীরা তাদের ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।’
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ে আনোয়ারা ও কর্ণফুলি থানার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করার কথা ছিল। তাই অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো। কিন্তু আকস্মিক কয়েক’শ নেতাকর্মী স্লোগান দিয়ে কার্যালয়ে ঢুকেই ভাঙচুর শুরু করে। এমনকি তারা পুলিশের ওপরও চড়াও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ১২ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছি। এ ঘটনায় পুলিশের দু’জন কনস্টেবলও আহত হয়েছেন।’
এরআগে গত ১২ এপ্রিল জেলার বোয়ালখালি উপজেলার কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী ছুরিকাহত হন।