জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র নাজিমউদ্দিন সামাদ হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে মঙ্গলবারের মধ্যে গ্রেফতার করা না বুধবার উপাচার্য ভবন ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়কারী ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, নাজিম হত্যাকারীদের গ্রেফতারে জবি প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই। সোম ও মঙ্গলবারের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অগ্রগতি না পেলে বুধবার উপাচার্য ভবন ঘেরাও করা হবে।
এর আগে নাজিম হত্যার প্রতিবাদে রোববার সকাল আটটায় বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ভবনের ফটকের তালা ভেঙ্গে ফেলে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সভাপতি মেহরাব আজাদ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট পালন করেছেন। নাজিম হত্যায় জড়িতরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরে তারা মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ধর্মঘট বানচাল করতে ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন। যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরাসরি আন্দোলনে আসতে ভয় পাচ্ছেন। নিরাপত্তা নিয়েও তারা শঙ্কিত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রদের ডাকে ধর্মঘট চলাকালে অধিকাংশ বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। কিছু কিছু বিভাগে শিক্ষকেরা ক্লাস-পরীক্ষা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে সড়ক অবরোধ বন্ধে ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমান পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি আবুল হাসান জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হত্যাকারীদের গ্রেফতারে সকল ধরনের প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার রাতে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের একরামপুর মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সান্ধ্যকালীন (এলএলএম) কোর্সের বি সেকশনের ছাত্র নাজিমউদ্দিন সামাদ কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যার প্রতিবাদে পরদিন বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করে দিনভর বিক্ষোভ করে জবির শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে আজ রোববার জবিতে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।