পাঁচ দফা দাবিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি দাবি আদায়ে শনিবার তারা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশের পর হাসপাতালের পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা ও মারধেরর ঘটনায় এরই মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে দু’দিন ধরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালের রোগীরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা চালানো বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, ক্যাম্পাসে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ পাঁচ দফা দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডিউটি শেষে হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসের হোস্টেলে ফেরার পথে ইন্টার্ন চিকিৎসকর সুমন মিয়ার ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা সুমনকে বেদম মারধর করে নগদ অর্থ ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় ডা. সুমনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের ক্যাম্পাসে আরো তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি করেন ইন্টার্র্ন চিকিৎসকরা। তাদের অভিযোগ— বারবার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
চলমান আন্দোলেনর অংশ হিসেবে শনিবার সকালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্যাম্পাসে আধাঘণ্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাসপাতাল পরিচালককে স্মারকলিপি প্রদান করেন। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান রিফাত, সাধারণ সম্পাদক ডা. বিজন সরকার, ডা. নাজমুল হুদা, ডা. তমা, ডা.রওজাতুল রোম্মান প্রমুখ।
পরে ডা. মাহমুদুর রহমান রিফাত জানান, তাদের দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে চরম বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা। মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয় কবির হোসেন বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে আমরা রোগী নিয়ে পড়েছি সমস্যায়। কারণ চিকিৎসকরা দিনে একবার বা দু’বারের বেশি আসেন না রোগীর কাছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই রোগীদের দেখভাল করেন। এছাড়া রোগীর ছোট-খাট সমস্যা হলে আমরা ছুটে যাই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছে।’
গাইনি ওয়ার্ডের রোগী লতিফা বেগমের স্বামী জাকির হোসেন বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে হাসপাতালে রোগী নিয়ে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এভাবে কর্মবিরতি চললে রোগীকে এই হাসপাতাল থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে হবে।’
হাসপাতালের পরিচালক ডা. আ স ম বরকতউল্লাহ জানান, বিষয়টি নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক, স্বাচিপ নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
মেডিকেল ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া জানান, এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।