একের পর হত্যা। রক্তাক্ত জনপথ। উন্নয়নের স্রোত। কুমিল্লা টু ঢাকা, ভায়া বাঁশখালি। জীবনের দাম কত সে প্রসঙ্গ এখন অপ্রাসঙ্গিক। ভয় এবং আতঙ্ক সবসময়। কী বোর্ডে আঙ্গুল চলে না। প্রতিদিনই কিছু না কিছু লেখা হয়। শেষ পর্যন্ত লেখা আর শেষ করা হয় না। হলেও প্রকাশের চেষ্টাও করা হয় না। গ্রাস করে নানা চিন্তা, ভয়, আতঙ্ক। কখন কি হয়। পরিণতি কি? সদা সতর্ক। এটা বেঁচে থাকা। আবার এক ধরনের মৃত্যুও।
সাগর-রুনি। রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতীক। আজও জানা গেলো না, তাদের হত্যাকারী কে? নাকি তারা খুনই হননি। নাকি তাদের জ্বিন হত্যা করেছে। অবাক হবেন না। বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখন এক নতুন স্তরে উন্নীত হয়েছে। কোন উড়াল সাংবাদিক যদি এটা লিখেন, সাগর-রুনিকে জ্বিন হত্যা করেছে- আপনি বিস্মিত হতে পারেন, আমি হবো না। সোহাগী জাহান তনু হত্যার আড়াই সপ্তাহ পার হয়ে গেলো। সারা দেশে কিছু প্রতিবাদও হয়েছে। কিন্তু আখেরে কি হলো? হয়রানির মুখে তনুর পরিবার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসবাদ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। হতাশ, ক্ষুব্ধ তনুর ভাই না কি এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেছেন, স্যার আমাদেরকেই ঝুলিয়ে দেন। এ ক্যামন রাষ্ট্র? বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে পুরো তদন্ত প্রক্রিয়াই। কাকে বাঁচানোর জন্য এতো প্রচেষ্টা। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের নামে যেটি বের হয়েছে তা কেউই বিশ্বাস করছেন না। তবে মহাশয়েরা যা বলেছেন, তাই হবে। মানুষের বিশ্বাস-আশ্বাসে কিছুই যায় আসে না। এখন বলা হচ্ছে, তনু ধর্ষিত হয়নি। কিন্তু তনু তো খুন হয়েছে। নাকি তনু খুনও হয়নি। কোন একদিন হয়তো বলা হবে, তনু খুনও হয়নি। এও হয়তো বলা হতে পারে, তনুকে জ্বিনে হত্যা করেছে। দোহাই আপনার, কেউ যদি তা বলে আপনি বিস্মিত হবেন না।
বাঁশখালিতে রক্তের দাগ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন ট্রিগার হ্যাপি। যখন তখন গুলি চালায় তারা। না এ জন্য কোন জবাবদিহি তাদের করতে হয় না। আমরা বসে বসে হিসাব কষি, কত জন মারা গেলো, চার জন/পাঁচ জন/ছয় জন। গুলিতে মারা যাওয়া এদেশে এখন খুব বড় কোন খবরও নয়।
কুমিল্লা, বাঁশখালি হয়ে অনাকাক্সিক্ষত হত্যা এখন ঢাকাতেও। কোথায় আপনি নিরাপদ। মসজিদেও নিরাপদ নন মুয়াজ্জিন। হত্যার শিকার হতে হয়েছে তাকে। এরপর খুন হলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যার আরেক পরিচয় ব্লগার। আরও বহু প্রাণ ঝরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরপরও বলা হবে- এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সত্যিই সেলুকাস, কি বিচিত্র এ দেশ।