কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবী করেছেন স্থানীয়রা। আজ সোমবার বিকাল তিনটায় উপজেলার গন্ডামারা এলাকার পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় বেসরকারি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় ঘটে এই ঘটনা। নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন পশ্চিম গন্ডামারা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের আশরফ আলীর পুত্র মর্তুজা আলী, আংকুর মিয়া ও পাতান পাড়ার জাকির হোসেন। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সকালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় একটি সিএনজি ও একটি পিকআপ প্রবেশ করতে চাইলে এলাকার লোকজন তাতে বাধা দেন। ওই ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ শনিবার রাতে প্রকল্প এলাকা থেকে ১০ জন লোককে আটক করেন। পরে প্রকল্প এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। স্থানীয়রা জানান, গতকাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করায় এলাকাবাসীর মিছিলে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এতে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ৩ জন। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে গ্রামবাসী ও পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। থেমে থেমে চলছে সংঘর্ষও। এদিকে এই ঘটনায় স্থানীয়রা তিনজন নিহত হয়েছে বলে দাবি করলেও পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হাজী পাড়া স্কুল মাঠে সমাবেশের ডাক দেন প্রতিরোধ কমিটি। একই সময়ে বিদ্যু কেন্দ্রের পক্ষে সমাবেশের ডাক দেন আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল আলম। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। তবে বিকেলে ১৪৪ ধারা ভেঙে সমাবেশ করতে গেলে প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এসময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষের বেশ কিছু লোক সংঘর্ষে যোগ দেয়। তিন জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত না করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মো. হাবিবুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকায় পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিকেলে একই স্থানে সমাবেশ ডাকে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ওই স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু বিকেল চারটার দিকে বিপক্ষের গ্রুপটি ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে ওই স্থানে মিছিল করতে থাকে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয় বলে জানান তিনি। বাঁশখালী সংবাদদাতা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বিক্ষোভকারীদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় ও চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রসঙ্গে বাঁশখালী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শামসুজ্জামানও কোন তথ্য দিতে পারেননি। তিনি ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত আছে বলে ফোন কেটে দেন।
এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত