ঢাকা: বাড়িঘর ভাঙচুর, হুমকি-ধামকি আর উৎকণ্ঠার মাঝেই দ্বিতীয় দফায় ৪৭ জেলার ৬৩৯ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। ভোটের আগে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোটাদের মধ্যেও বিরাজ করছে নানা শঙ্কা। এরপরও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি বাড়তি কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা ও কারচুপির ঘটনায় দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত বিরোধী মতের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। ইতোমধ্যে প্রতিপক্ষের কেন্দ্র দখলের হুমকি-ধামকিসহ নানান অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিকার চেয়েছেন তারা।যদিও নির্বাচন কমিশন ভোটারদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটগ্রহণের আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। প্রতিপক্ষের উপর হামলা, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, প্রচারে বাধা দেয়াসহ সহিংস ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে চলছে আচরণ বিধি লংঘনের হিড়িক। কোথাও কোথাও প্রার্থী ও ভোটারদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করায় শেষ মুহূর্তে ইসিতে জমা হয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। এসব ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রিটার্নিং অফিসারকে ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নিতে শুধু কাগজে-কলমে নির্দেশনা পাঠিয়ে দায় সারছে ইসি।
প্রার্থী, ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা
দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৩৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ ধাপে ৬৩৯ ইউপিতে মোট ৩৩ হাজার ২৯০ জন প্রার্থী রয়েছে। চেয়ারম্যান পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রয়েছে ৩ হাজার ১১৪ জন। এরমধ্যে ১৭টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৫৫৯ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে এক হাজার ৫৫৫ জন। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬ হাজার ৭৯৯ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৩ হাজার ৩৭৭ জন। এসব ইউপিতে মোট ভোটার ১ কোটি ১২ লাখ ১২ হাজার ৩৩৪ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬ হাজার ২০৫টি। ভোটকক্ষ ২৩ হাজার ২১টি। আজকের ভোটে মোট ১ লাখ ২ হাজার ২৬৮ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার ৬ হাজার ২০৫ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৩২ হাজার ২১ জন ও পোলিং অফিসার ৬৪ হাজার ৪২ জন।
অনিয়ম হলে ছাড় নয়
ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে অনিয়ম হলে ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহ নেওয়াজ। বুধবার তিনি বলেন, ভোটে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নির্বাচনী মাঠে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
ইউপি নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মঙ্গলবার থেকে মাঠে রয়েছে বিভিন্ন বাহিনীর দেড় লাখ সদস্য। একইসঙ্গে ৪৭ জেলার ৬৪৩ ইউপিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও অপরাধ তদারকিতে মাঠে রয়েছেন।
নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি
নির্বাচনের কারণে ৬৪৩ ইউপিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। ফলে নির্বাচনী এলাকায় সকল অফিস বন্ধ থাকবে।
যান চলাচল নিষিদ্ধ
সোমবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ভোটের আগের রাত থেকে ৩২ ঘন্টা সব ধরণের যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ইসি। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৭১২ ইউপিতে ভোট হয়েছে। আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোট রয়েছে ৬৩৯ ইউপিতে। তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল, চতুর্থ ধাপে ৭ মে, পঞ্চম ধাপে ২৮ মে ও ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।