ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে যাত্রী হত্যার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ পলাতক ২৮ জন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ মার্চ) মামলাটির (যাত্রাবাড়ী থানার মামলা নম্বর ৫৯) চার্জশিট আমলে নিয়ে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হচ্ছেন খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে অথবা জামিনে আছেন ১০ জন। একই ঘটনায় দায়ের করা অপর একটি মামলায় একই আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক পৃথক আরও দু’টি চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
তিনটি চার্জশিটেই খালেদা জিয়াকে প্রধান ও হুকুমের আসামি দেখিয়ে তাকে পলাতক দেখানো হয়।
গত বছরের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামক এক বৃদ্ধ যাত্রী।
এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করেন থানার উপ-পরিদর্শক কে এম নুরুজ্জামান। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে একটি (মামলা নম্বর ৫৮) এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় অন্য মামলাটি (মামলা নম্বর ৫৯) দায়ের করা হয়।
মামলায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীসহ মোট ৮০ জনকে মামলার আসামি করা হয়।
গত বছরের ৬ মে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলাটিতে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই বশির আহমেদ। ১৯ মে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই জাহিদুল ইসলাম। তিনটি চার্জশিটেই ৩৮ জনকে আসামি করে এজাহারভুক্ত অপর ৪২ আসামিকে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চার্জশিটে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বরকত উল্লাহ বুলু, আমান উল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, বিশেষ সহকারী শামসুল ইসলাম শিমুল বিশ্বাস, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, মীর আবু জাফর শামসুদ্দিন দিদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপির ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ, তার ছেলে তানভীর ওরফে রবিন, নবীউল্লাহ নবী, কাইয়ূম কমিশনার, লতিফ কমিশনার এবং পেশাজীবী দলের নেতা সেলিম ভূঁইয়া।