ঢাকা : খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে কারো দিকে না তাকিয়ে আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ থেকে নিজেদের বিবেকের বাণী শুনে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘এটি জাতীয় মর্যাদার প্রশ্ন।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. এমাজউদ্দীন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সরকারের সমালোচনা করে অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। গত ৭-৮ বছর ধরে গণতন্ত্রের সামনে আমরা কোনো আশার আলো পর্যন্ত দেখি না। অথচ গণতন্ত্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।
১৫৩ সাংসদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, একটি ভোটও ব্যালট বাক্সে পড়লো না। অথচ তারা সংসদ সদস্য হয়ে গেলেন। তাদের মধ্যে যদি আত্মসম্মানবোধ তীব্র হতো, তাহলে একটি ভোট না পেয়েও শপথ গ্রহণ করলেন কিভাবে? দেশবাসীর আজ সে জিজ্ঞাসা।
আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা প্রসঙ্গে ড. এমাজউদ্দীন বলেন, ‘আমার মনে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুই মন্ত্রীর (খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক) বিরুদ্ধে আদালতের রায় শুনেছেন, জেনেছেন। এই দুই ভদ্রলোক (দুই মন্ত্রী) অন্য কারো দিকে না তাকিয়ে যদি নিজেদের বিবেকের দিকে একটু তাকান, বিবেকের বাণী শোনেন, তাহলে ভালো হয়। বিবেকের বাণী কানে পৌঁছামাত্র তারা যেন আর মন্ত্রিত্বে না থাকেন। কারণ, এটি জাতীয় মর্যাদার প্রশ্ন।
এ প্রসঙ্গে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে একজন আইজিকে (পুলিশ প্রধান) দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই চাকরি ছেড়ে দেন। এ ধরনের ঘটনা আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মানের ব্যাপার। আমাদের মন্ত্রীদের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটি আমি বিশ্বাস করি না। তাদের অবশ্যই আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ আছে।
সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ উপাচার্য বলেন, ‘তনু হত্যার সঠিক বিচারের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের ক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করা দরকার। অথচ এখন পর্যন্ত অপরাধীদের ধরাই হলো না। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হেলেন জেরিন খান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী, জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।