অবশেষে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

2015_12_29_01_57_18_6GXO9KSFsUh3OJRUDUMkhmfwWmTgSK_original

 

 

 

 

ঢাকা : অবশেষে  জ্বালানি তেলের দাম কমানো হচ্ছে। প্রথমে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম কমানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য তেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তেলের দাম কমানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, সরকার সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের কয়েক দফা দরপতনের পরও দেশের বাজারে দাম কমানো হয়নি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ ছিল। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বারবার দাম কমানোর পরমর্শ দিয়েছেন ৷
অর্থনীতিবিদদের দাবি, তেলের দাম গড়ে ১০ শতাংশ কমানো হলে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি  হবে।

দেশে না দাম কমায় অতিরিক্ত লাভ করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। সরকার পক্ষে থেকে বলা হচ্ছিল, বিপিসির দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত লোকসান পুষিয়ে নিতেই দাম কামনো হচ্ছে না।

তবে এরপরও জ্বালানি তেলের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে গত ৬ জানুয়ারি জ্বালানি উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেন মুহিত ৷

সেখানে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে আামদের কিছু করণীয় আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে ব্যাপক দরপতন হয়েছে।মনে হচ্ছে তেলের দরপতনটি কিছু দিনের জন্য স্থায়ী হবে।…. এখন বাজার দর নিয়ে চিন্তা করার যথোপযুক্ত সময়।’

দাম কমানোর প্রক্রিয়া হিসেবে অর্থমন্ত্রী জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করতে বলেন। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিতে আলোচনা হবে বলে জানান ।

চিঠি পাওয়ার পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ সংক্রান্ত কার্যেক্রম শুরু করতে জ্বালানি সচিবেকে নির্দেশ দেন।

সূত্র জানিয়েছে, বেশি দামে তেল কিনে কম দামে বিক্রি করায় ১৯ বছরে বিপিসির লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকা। তবে গত দুই বছর ধরে লাভ করছে। গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি পাঁচ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরমধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।

দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়।  এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।

বর্তমানে বিপিসি তেলভেদে প্রতি লিটারে ১৩ থেকে ৩০ টাকা পর্যান্ত লাভ করছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল। বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *