আদালত অবমাননার অভিযোগ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আগামী ২৭ মার্চ পুনরায় আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন। এদিন আপিল বিভাগে এই দুই মন্ত্রীর হাজির দিন ধার্য ছিল।
এর আগে আদালত অবমাননার অভিযোগ বিষয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা তুলে ধরতে রোববার সকাল ৯টার আগেই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাজির হন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল।
গত ৫ মার্চ রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক গোলটেবিল আলোচনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় ঘোষণা নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও সংশয় প্রকাশ করেন দুই মন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রধান বিচারপতি পদে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেম আলীর আপিলের পুনঃশুনানির দাবি জানান। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান বিচারপতি তার আসনে থাকতে চাইলে ‘অতিকথন’ বন্ধ করা উচিত বলেও পরামর্শ দেন।
তাদের ওই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
তবে রায়ের আগের দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুই মন্ত্রীর ওই বক্তব্য সরকারের নয়, তাদের নিজস্ব বলে জানান।
এরপর ৮ মার্চ মীর কাসেমের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ দুই মন্ত্রীকে ১৫ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে নিজেদের বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ১৪ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। ওইদিন আদালত বলেন, ‘বিচার বিভাগ নিয়ে দুইমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা স্তম্ভিত। বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ আদালত অবমাননার শামিল।’
সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের পর ১৪ মার্চ প্রথমে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে একই দিন আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও।
এরপর গত ১৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আদালতে উপস্থিত হলেও দেশের বাইরে থাকায় ওইদিন আদালতে হাজির হতে পারেননি খাদ্যমন্ত্রী। তবে ওইদিন আইনজীবীদের মাধ্যমে তারা আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত ২০ মার্চ নতুন দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী রোববার তারা আদালতে হাজির হন।