ঢাকা: বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সরকার ‘সততা’ দিয়ে জয় করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্র দূর করেই এখন পদ্মাসেতু নিজেরা করছি। এটি জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব, আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল এই সেতু নির্মাণ; যা আমরা করে যাচ্ছি। তবে এখন দেশে ষড়যন্ত্র যে কমে গেছে তা নয়। ষড়যন্ত্র সবভাবেই হয়েছে- মানুষ পুড়িয়ে, সম্পদ ধ্বংস করেও দেশের ভেতরে ষড়যন্ত্র করেছে বিএনপি-জামায়াত।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতার ৯৭তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে পেরেছি বলেই তো মানুষের সেবা করতে পারছি, দেশের উন্নয়ন করতে পারছি। এই নির্বাচন রুখে দিতেও তো কম ষড়যন্ত্র হয়নি। ৫৮২টি স্কুল পুড়েছে, নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর আঘাত এসেছে- আরও কত কী।
‘এদিকে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তারা দেশে বাংলা ভাই ও জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়- সে আমলে কিবরিয়া-আহসানুল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করেছে। ২১ আগস্ট দিনে-দুপুরে জনসভায় বোমা মেরে মানুষ মারা হয়েছে। এই ধরনের জঘন্য ঘটনাগুলো তারা ঘটিয়েছে’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে পাকিস্তানের ডুপ্লিকেট সরকার করা হয়। তখন দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি।
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার সময় ‘বাংলাদেশকে ডিজিটাল’ নিয়ে ঠাট্টা করা হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব ধরনের ঠাট্টার জবাব দিয়েছি। দেশকে ডিজিটালরূপে প্রতিষ্ঠা করেছি। গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। এছাড়া কেউ গৃহহারা থাকবে না- আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি এখন। একটি টিন হলেও আমরা গৃহহারাকে দেবো।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি বলেন, একজন মানুষ তার দেশের মানুষকে কত গভীরভাবে ভালোবাসতে পারেন তার উদাহরণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি প্রতিটি মানুষের মনের কথা বঙ্গবন্ধু জানতেন। এদেশের মানুষও তাকে মন থেকে মানতেন। বাংলার মানুষ শোষিত হোক-বঞ্চিত হোক বঙ্গবন্ধু তা কোনো দিনই চাননি।
তিনি বলেন, আল্লাহর তরফ থেকেই বঙ্গবন্ধু হয়ত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু এই দেশের মানুষকে মুক্তি দিয়েছেন। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার অবদান অনেক। পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টিতেও যেমন বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল, ঠিক তেমনি তাদের (পাকিস্তানিদের) শোষণ থেকে বাঙালির মুক্তিতেও তার পূর্ণ অবদান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক সত্যিকার অর্থেই বাঙালির কথা বলেছেন সব সময়। পরাধীন বাঙালিকে মুক্তির সনদ ছয়দফা দিয়ে গ্রেফতার হন তিনি। এর আগে- পরেও তাকে বারবার-কয়েকবার গ্রেফতার করা হয়। সারাটা জীবন তিনি এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে এতো কাজ কী করে একজন মানুষ করতে পারেন- সেটি বড় বিষয়! যা বঙ্গবন্ধু বলেই করতে পেরেছিলেন। এখন রাষ্ট্র পরিচালনার সময় দেখি সব কিছুতেই তার হাত-তার অবদান।