অবশেষে নিরবতা ভাঙলেন বলিউড সুপারস্টার হৃতিক রোশন। অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতের সঙ্গে তার কথিত প্রেম নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে বলিউডে। এক বিবৃতিতে ৪২ বছর বয়সী এই তারকার অভিযোগ, কেউ তার নামে ভুয়া ই-মেইল আইডি খুলে তা ব্যবহার করছে। এই ই-মেইল আইডিকে ঘিরে এখন যতো আলোচনা।
মজার ব্যাপার হলো, বিবৃতির কোথাও কঙ্গনার নাম ব্যবহার করেননি হৃতিক। তবে মানসিক সমস্যা নিয়ে কথা বলে ঠিকই ২৮ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে হৃতিক বলেছেন, ‘কারও ব্যক্তিগত বিষয়কে জনগণ অপ্রয়োজনীয়ভাবে এতোটা বাড়িয়ে ফেলে কারণ তারা পুরো সত্যিটা জানে না। সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সৃষ্ট সমস্যার সমাধান ও ব্যক্তিগত রাখার জন্য আইনের পথ বেছে নিয়েছি। ব্যক্তিগত আইনি নোটিশের তথ্য প্রকাশ করা নৈতিকতা ভঙ্গের সামিল। এমন সময় আসেন যখন পরিবার এবং ভাবমূর্তি রক্ষা করতে নিরবতা ভাঙার প্রয়োজন হয়।’
ডুগ্গু (হৃতিকের ডাকনাম) আরও বলেন, ‘মূল বিষয় হলো, [email protected] আইডিটি আমার নয়। উল্লেখিত (কঙ্গনার কথাই বুঝিয়েছেন) ব্যক্তির সঙ্গে ছদ্মবেশে কেউ এ ই-মেইল থেকে জালিয়াতি করছে জেনে ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর মুম্বাই সাইবার ক্রাইম সেলে একটি মামলা দায়ের করি। এ আইডির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। পুরো বিষয়টি ডালপালা ছড়িয়েছে আমার পরিচয় নিয়ে প্রতারণার কারণে। গত ৫ মার্চ আমার অভিযোগ পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। ক্রাইম ইউনিট ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সে ধরা পড়ে গেলেই সব পরিস্কার হয়ে যাবে।’
বিবৃতির শেষ অংশে কঙ্গনাকে উদ্দেশ্য করে হৃতিক বলেন, ‘মানসিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করলে তা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। তবে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বলছি না। পুরো বিষয় নিয়ে আমাকে চুপ থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিলো। এজন্যই গত দুই বছর ধরে চুপ ছিলাম।’
এদিকে কঙ্গনার আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিজওয়ান সিদ্দিকি মতে, জনগণের সহমর্মিতা পাওয়ার চেষ্টা করছেন হৃতিক। তার ভাষ্য, ‘এটা সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। আমার মক্কেলের সঙ্গে অপরাধ করে এখন সাধু সাজতে চাইছেন তিনি। কোনো কারণ ছাড়াই কঙ্গনাকে আতঙ্কিত করেছেন হৃতিক রোশন। আমার মক্কেল কোথাও যে তার নাম নেননি সেটা কিন্তু অস্বীকার করতে পারবেন না। তিনিই নিজেকে ‘হীনমন্য প্রাক্তন প্রেমিক’ ধরে নিয়ে জলঘোলা করেছেন।’
হৃতিক ও কঙ্গনার বাগযুদ্ধ রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে উভয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা করায়। হৃতিককে ‘কুইন’ তারকা কঙ্গনা ‘হীনমন্য প্রাক্তন প্রেমিক’ উল্লেখ করার পর থেকেই এই বিতর্কের জন্ম হয়। এরপর থেকে নেতিবাচক কারণে খবরের শিরোনামে আছেন দু’জনে।
কঙ্গনার ওই মন্তব্যের পর তাকে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ক্ষমা চাইতে বলে আইনি নোটিশ পাঠান হৃতিক। তার বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ এনে ২১ পাতার উত্তর দেন কঙ্গনা। তার আইনজীবীর মন্তব্য, ‘কঙ্গনা এখন নিজেই বড় তারকা। হৃতিকের নাম বেচে আলোচনায় আসার প্রয়োজন নেই তার। তিনি যে নোটিশ পাঠিয়েছেন তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’
অ্যাডভোকেট রিজওয়ান সিদ্দিকি আরও বলেন, ‘হৃতিক নোটিশে উল্লেখ করেছেন কঙ্গনাকে সামাজিকভাবে চেনেন না তিনি। তা-ই যদি হবে তাহলে তার জন্মদিনের পার্টিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কীভাবে এসেছিলেন? হৃতিক রোশন যে মিথ্যা বলছেন তার অনেক প্রমাণ আছে।’
মুম্বাই মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ‘কাইটস’ ছবির কাজ চলাকালে কঙ্গনার প্রতি আকৃষ্ট হন হৃতিক। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে প্যারিসে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ‘কৃষ’ তারকা। কিন্তু ‘ব্যাং ব্যাং’ ছবির অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে হৃতিকের ঘনিষ্ঠতার কারণে মুখ ফিরিয়ে নেন কঙ্গনা।